পটিয়ায় চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অবরোধের মুখে গতকাল রোববার ২৫ টি ব্যাংকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ ছিল। এসময় কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারীকেও ব্যাংকে ঢুকতে দেননি আন্দোলনকারীরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন লেনদেন করতে আসা হাজারো গ্রাহক। এছাড়াও দুর্ভোগ পোহাতে হয় পটিয়া সাব–রেজিষ্ট্রি অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি অফিস আদালতে। সকল চাকরিচ্যুত স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মকর্তাবৃন্দের ব্যানারে এ ধরনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। বিভিন্ন ব্যাংকের উপ–শাখাগুলোতেও লেনদেন হয়নি।
আন্দোলনকারীরা জানান, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে পটিয়া ও চট্টগ্রামের ছেলেদের ‘অন্যায়’ ভাবে কর্মচ্যুতির প্রতিবাদ জানাতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। তারা চাকরিচ্যুত সকল কর্মকর্তা–কর্মচারীকে অনতিবিলম্বে পুনর্বহালেরও দাবি জানান। নয়তো সামনে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন অবরোধকারীরা। আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদের নিয়ে পটিয়ার বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
এদিকে সন্ধ্যায় পটিয়া প্রেস ক্লাবে আন্দোলনকারীরা এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি চলার সময় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান তাদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারেক, মো. শিবলু আলম, রুবেল, জয়নাল আবেদীন চৌধুরী, মো. আমজাদ হোসেন, জয়নাল আবেদীন, শাকিলা পারভিন, গাজী আবু বকর ফাহিম ও মো. মঞ্জুর হিরো। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান (প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) আরিফুল ইসলাম, পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি টিম এসে আন্দোলনকারী ও নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন। এসময় থানার মোড়স্থ একটি মার্কেটের অফিসে প্রশাসনের সাথে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করা স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সংগঠক বাহাদুর খাদেমী, কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক ও সংগঠক মফিজুল ইসলাম বাবলু চৌধুরী, সংগঠক বোরহান উদ্দিন ও পটিয়া পৌরসভা যুবদলের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিপন প্রমুখ। বৈঠকে তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে দুপুর ২টার দিকে ২৫ ব্যাংকের অবরোধ কার্যক্রম তুলে নিলে ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।
ব্যাংকিং কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় সাব–রেজিষ্ট্রি অফিসের কার্যক্রম স্থবির ছিল জানিয়ে পটিয়া সাব রেজিষ্ট্রার মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ব্যাংক লেনদেন বন্ধ থাকায় জমি রেজিষ্ট্রি কার্যক্রম চলেনি।
আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন ইসলামী ফ্রন্ট নেতা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পীরজাদা ছৈয়দ এয়ার মুহাম্মদ পেয়ারু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রিদুওয়ান সিদ্দিকী, দক্ষিণ জেলা ইসলামী ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসাইন, দক্ষিণ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডা. মো. এমদাদুল হাসানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।