পটিয়া, কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী বাড়ছে নির্বাচনী সহিংসতা

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ at ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পটিয়া ও কর্ণফুলী এবং বোয়ালখালীতে পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে সহিংসতা ও উত্তেজনা। বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন, ভাঙচুর, হামলা ও পাল্টা হামলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভোটারদের মাঝেও বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, স্ব-স্ব থানা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে চলছে প্রার্থীদের একের পর এক অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ।
আমাদের পটিয়া প্রতিনিধি জানান, ৭ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচারণার শুরু থেকে পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন ইউপিতে নির্বাচনী সহিংসতা ও অভিযোগের মাত্রা বাড়ছে। গত ২১ ডিসেম্বর পটিয়ার কাশিয়াইশ ইউপিতে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কাসেম ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ কাইছের সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী ক্যাম্প ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হয়। কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ও চরলক্ষ্যায় নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে চলছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ঘটনা। শিকলবাহায় নাগরিক কমিটির স্বতন্ত্র ইউপি চেয়ারম্যান (আনারস) প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে বুধবার নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা সুলতানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। একইভাবে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউপিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সোলায়মান তালুকদার বুধবার বিকেলে রিটার্নিং অফিসার রকর চাকমার কাছে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। একইভাবে পটিয়ার খরনা, জঙ্গলখাইন, ছনহরায় ইউপিতে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে পটিয়া থানা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দিয়েছে খরনার ইউপি
চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, জঙ্গলখাইন ইউপি চেয়ারম্যান গাজী ইদ্রিস, ছনহরায় মুক্তিযোদ্ধা সামশুল আলম। অপরদিকে পটিয়ার কচুওয়াই ইউপিতে স্বতন্ত্র ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান বাবুর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার অভিযোগ উঠেছে। হাবিলাসদ্বীপ ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের প্রচারণায় হামলা ও মাইক ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল কমির মজুমদার ও কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ জানান, ইউপি নির্বাচন নিয়ে ছোটখাটো নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে। এগুলো নিয়ে আমরা তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পুলিশ বিভিন্ন ইউপিতে সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। যেকোনো ধরনের সহিংসতাসহ অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তারা।
বোয়ালখালী প্রতিনিধি জানান, আগামী ৫ জানুয়ারি বোয়ালখালীর সাত ইউপি নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি ও পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ তুলছেন একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে। তবে ইউনিয়নগুলো প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে।
উপজেলার আহলা-করলডেঙ্গা ইউনিয়নে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক মন্নানের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ তার অনুসারী, ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি -ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে তিনি উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। অপরদিকে সারোয়াতলী ইউপিতে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত চেয়ার প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এস এম মহীউদ্দীন চৌধুরী জসিম ও আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ, এম, এম ইউসুফ চৌধুরী তাদের প্রচার-প্রচারণার কাজে বাধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে।
এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে খোদ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ মোকারমও। এদিকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহিংসতার আশংকা করছেন সাধারণ ভোটাররাও।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, লিখিত কিছু অভিযোগ পেয়েছি আমরা। এসব অভিযোগ গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাবিলাসদ্বীপ ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্র্রার্থীর প্র্রস্তাবকারী জেলে
পরবর্তী নিবন্ধপুরোদমে ক্লাসে ফিরতে মার্চ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ : শিক্ষামন্ত্রী