পটিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়দের প্রতিবাদ

এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা এসআইকে অপসারণের দাবি

পটিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৭ মার্চ, ২০২৪ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া থানার এসআই জাকির হোসেনকে অপসারণের দাবিতে ও নিরীহ ব্যক্তিকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেছেন উপজেলার আজিমপুর গ্রামের বিক্ষুদ্ধ লোকজন। গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় মহাসড়কের জুলুর দিঘির পাড় এলাকায় বিক্ষুদ্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কের দুই পাশে শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে। অবরোধের ১৫ মিনিটের মাথায় কচুয়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে নেন। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে আজিমপুর গ্রামের লোকজন একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওই এলাকার ওবায়দুল হক প্রকাশ এ কে খান নামে এক ব্যক্তিকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দিয়ে হেলহাজতে প্রেরণের প্রতিবাদে ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এলাকার সেকান্দর আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, নিলু আক্তার নামের একজন মহিলা আজিমপুর গ্রামীণ ব্যাংকের পেছনে জনৈক ছলমা বেগম নামে মহিলার কাছ থেকে ঘর ভাড়া নেন। সেখানে প্রায় সময় অচেনা লোকজন আসাযাওয়া করে। ওই মহিলা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন এবং তার চলাফেরা অশালীন। এর প্রতিবাদ করায় এ কে খানের সাথে নিলু আক্তারের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কে খানকে ফঁাঁসানোর জন্য নিলু আক্তার কয়েকবার হুমকি দেন। এর জের ধরে ১৪ মার্চ সকাল ১১টায় এ কে খান ও তার স্ত্রী শাহানা আক্তার বুলুর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এতে নিলু আক্তার তার ৫ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে মর্মে পটিয়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের তদন্ত না করে ওইদিন বিকাল ৪টায় এসআই জাকির হোসেন এ কে খানকে তার বাড়ি থেকে তুলে থানায় নিয়ে আসেন। পরদিন ১৫ মার্চ বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করে। ১৫ মার্চ রাত ১০টায় থানায় একটি মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা মামলা রেকর্ড করে।

এ ব্যাপারে কচুয়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, নিলু আক্তার রোহিঙ্গা অধিবাসী ছিলেন। উত্তর শ্রীমাই গ্রামে জায়গা কিনে বসতঘর নির্মাণ করেন। সেখানে অনৈতিক কাজের কারণে এলাকার লোকজনের চাপে পড়ে জায়গা বিক্রয় করে ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। তিনি জানান, এসআই জাকির হোসেন প্রায় সময় নিলু আক্তারের বাসায় আসাযাওয়া করতেন। এ কে খানকে ফাঁসানোর জন্য তিনি ভূমিকা রাখেন।

পটিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা বেগম বলেন, এ কে খানকে গ্রেপ্তারের খবর শুনে ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম ও এলাকার লোকজন নিয়ে আমরা থানায় যাই। এলাকার লোকজন দেখে নিলু আক্তার মিথ্যা মামলা রেকর্ড করতে না চাইলেও এসআই জাকির হোসেনের চাপে পড়ে মামলাটি রেকর্ড করেন।

কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম বলেন, নিলু আক্তারের অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় এ কে খান রোষানলের শিকার হন। এসআই ও ওসিকে মিথ্যা মামলা রেকর্ড না করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা অনুরোধ রক্ষা করেননি। এছাড়া পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ থেকে যে ডাক্তার রিপোর্ট দিয়েছেন ওই রিপোর্ট দেওয়ার দায়িত্ব তার নয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাহেদুল হক, লাল মিয়া, মোহাম্মদ গনি, মোজাফফর আহমদ, মোহাম্মদ ইসলাম, লেদা মিয়া, রেজাউল করিম, মো. ফারুক ও শাহনেওয়াজ ছাড়ও শত শত লোক উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে পটিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅধিগ্রহণের ১১৪ কোটি টাকা ছাড়, প্রকল্পে আসবে গতি
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় দুই বছরের নিচের এক তৃতীয়াংশ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে