চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জে পুলিশসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পটিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টা ও রাত সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া থানার ভিতর ও থানার সামনে মহাসড়কে দুই দফায় ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় পুলিশসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্তত ২৩ জন আহত হয়।
আহতরা পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রিদুওয়ান সিদ্দিকীসহ ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রিদওয়ান সিদ্দিকী, তৌকির, তালহা, মাশরাফ, সাইফুল, শাহী, তায়েম, নাদিম, আয়াশ, সোহান, আকিল, ইরফান, রায়হান, সাইফুল, মুনতাসীর, মারুফ, মিহাদ, তুর্কিসহ বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হন।
জানা গেছে, রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি দীপঙকর দে কে রাত ৯টার টিকে পটিয়া থেকে ধরে এনে স্লোগান দিয়ে থানায় সোপর্দ করতে যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এসময় নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের বাকবিন্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১০ জন আহত হলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা থানার সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা এসে থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় পটিয়া থানা পুলিশ ও চট্টগ্রাম নগরীর পুলিশের স্পেশাল ফোর্স এসে ছাত্রদের ব্যাপক লাঠিপেটা করে এবং ধাওয়া দেয়। এসময় ১১ জন ছাত্র আহত হয়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ছাত্ররা দিকবিদিক পালিয়ে যায়। ছাত্রদের ধাওয়া করে ডাকবাংলো নিয়ে যায়।
পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, এখানে দুই দফায় ২১ জন ছাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় আহতরা বেশী গুরুতর ছিল। তাছাড়া দুইজন পুলিশ সদস্য হাতে সামান্য আঘাত পেয়ে তারাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মোঃ নাজমুন নুর বলেন, ছাত্রদের উপর কোন লাঠিপেটা করা হয়নি। তারা থানায় এসে উচ্ছৃঙ্খল আচারণ ও স্লোগান দেয়ায় তাদের ধাওয়া দিলে তারা দৌড়ে পালাতে গিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে কেউ কেউ আহত হয়। ছাত্ররা থানার দরজা ভাঙচুরও করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালহা আজাদীকে জানান, পুলিশ নিজেরা আসামি ধরে না। আমরা কোন আসামি ধরে থানায় নিয়ে গেলে বা কোন তথ্য দিলে পুলিশ কোন এ্যাকশনে যায় না এবং চিহ্নিত ফ্যাসিবাদীদের গ্রেপ্তারে কোন ধরণের তৎপরতা নেই। পটিয়া থানা পুলিশ নিজেরাই ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করছে। তারা শুধু মাটি বালি ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।