ঢাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলনকে ঘিরে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ এর পটিয়া সদর দপ্তর কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীর ব্যানারে ঢাকায় চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করেন সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরীসহ সমিতির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। কিন্তু নির্ধারিত ওই কর্মসূচি পালনের কিছুক্ষণ আগেই ঢাকার আন্দোলনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচি দেন সমিতির বেশ কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারী। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম ও পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুরসহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচি পালনকারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ব্যানার কেড়ে নেন চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী। এ ঘটনায় পুলিশ সমিতির কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করে এবং তিন কর্মচারীকে আটক করে। পরে আটক কর্মচারীরা মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।
জানা গেছে, অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে ৩ দিন ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা–কর্মচারী অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে এই আন্দোলনকারীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) একটি বার্তা দেয়। এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী শুক্রবার সমিতির সদর দপ্তরে ঢাকায় চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করেন। কিন্তু নির্ধারিত ওই কর্মসূচি পালনের কিছুক্ষণ আগেই ঢাকার আন্দোলনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচি দেন সমিতির বেশ কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। এসময় সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া ওই কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে সংহতি প্রকাশ কর্মসূচি পালনে বাধা দেন।
খবর পেয়ে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম ও পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুরসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া ৩ জন মিটার রিডার আহত হন। তারা হলেন, চন্দনাইশের মিটার রিডার আউয়াল, পটিয়ার সাকিব ও বাঁশখালীর সাখাওয়াত। এসময় ভিডিও ধারণের অভিযোগে মনির, শরীফ ও সৌরভ নামের ৩ কর্মচারীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। তবে পরে আটকৃতদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে এই আন্দোলনকারীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দাবি আদায়ের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে যে আন্দোলন কর্মসূচি তার বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করি। কিন্তু এর আগেই কিছু–কর্মকর্তা কর্মচারী আন্দোলনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে বিশৃক্সখলা করার চেষ্টা করছিল। তাই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে বিশৃক্সখল পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় ভিডিও ধারনের অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।