পটিয়া হাসপাতালে ডাক্তার-স্টাফকে জাসাস নেতার মারধরের অভিযোগ

আটকের ১৫ ঘণ্টা পর মুচলেকায় ছাড়া পেলেন

পটিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে চিকিৎসক, নার্স ও কয়েকজন স্টাফকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক জাসাস নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দক্ষিণ জেলা জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হামলা করেন। হামলায় আহত হয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তারেকুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ নার্স রুমু আকতার, জান্নাতুল নাঈম, ফারজানা আফরিন, এসএসিএমও অজয় কুমার শীল, ওয়ার্ডবয় মহিউদ্দিন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী রিন্টু কুমার নাথ।

জানা যায়, গত ১০ অক্টোবর সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে পটিয়া পৌর সদরের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী আবুল কাশেম নামের এ রোগী শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই রোগীর অক্সিজেন তুলনামূলক কম ছিল। হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ না থাকার কথা চিকিৎসকেরা রোগীর স্বজনদের জানিয়ে দেন। এ খবর পেয়ে রোগীর স্বজন দাবি করা উপজেলা জাসাস নেতা নাছির উদ্দিন হাসপাতালে এসে এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের সাথে তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে নাছির উদ্দিন কিছু বুঝতে না চেয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর ও গালিগালাজ করতে থাকেন। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম সাথে সাথে বিষয়টি সেনাবাহিনী, পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে জানান। রবিবার রাতেই ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে হাতেনাতে জাসাস নেতা নাছির উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পটিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর জাসাস নেতার হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য নাছির উদ্দিন দায়ী। সোমবার সকালে সেই জাসাস নেতার পক্ষে প্রতিনিধিসহ হামলার শিকার চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের উপস্থিতিতে এক জরুরি মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় জাসাস নেতা নাছির উদ্দিন এ ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে মুচলেখা দেন। মুচলেখা পেয়ে আটকের প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর তাকে পুলিশ ছেড়ে দেন।

পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জাসাস নেতা নাছির এ ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে মুচলেখা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজমা আকতার ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সাজ্জাদ ওসমানকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে তারা রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জাসাস নেতা মো. নাছিরের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফুটন্ত ফুলের ‘শিশু কিশোরদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার
পরবর্তী নিবন্ধডিম কি আমি মেশিন দিয়ে তৈরি করব, প্রশ্ন বাণিজ্য উপদেষ্টার