নৌযান ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। শ্রমিকদের খোরাকি ভাতা দেয়ার ব্যাপারে মালিকপক্ষ রাজি হওয়ার পর কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। ফলে তিনদিন পর গতকাল সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের কার্যক্রমসহ সারাদেশে নৌপথে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে।
খোরাকি ভাতা প্রদানসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট শুরু করে জাতীয় শ্রমিক লীগের আওতাধীন ছয়টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনসহ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ভবনে সিরিজ বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয়নি। অবশেষে গতকাল সকালে ঢাকায় উচ্চ পর্যায়ের একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে শ্রম মন্ত্রণালয়েও বৈঠক হয়। বৈঠকে জাহাজ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সংকট নিরসনে উভয়পক্ষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়। দাবির ব্যাপারে শ্রমিকদের সহনীয় এবং মালিকপক্ষকে কিছুটা ছাড় দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষ কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসে। মালিকপক্ষ খোরাকিভাতা হিসেবে কিছু বাড়তি অর্থ দিতে রাজি হয়। শ্রমিক নেতারাও তাদের দাবি মাসিক চার হাজার টাকা ভাতা থেকে কিছুটা ছাড় দেন। অবশেষে বৈঠকে জাহাজের ধারণ ক্ষমতা অনুসারে খোরপোষ প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। জাহাজের ধারণ ক্ষমতা শূন্য থেকে ১০০০ টন পর্যন্ত হলে ১০০০ টাকা হারে, ১০০১ টন থেকে ১৫০০ টন পর্যন্ত হলে ১২০০ টাকা হারে এবং ১৫০১ টন থেকে সর্বোচ্চ টন পর্যন্ত ১৫০০ টাকা হারে প্রতিমাসে জাহাজে কর্মরত শ্রমিকরা খোরপোষ ভাতা পাবেন।
চলতি অক্টোবর মাস থেকেই এই ভাতা পাবেন জাহাজ শ্রমিকরা।
ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অলস বসে থাকা ৪০টিরও বেশি বিদেশি মাদার ভ্যাসেলে কাজ শুরু হয়েছে। আমদানি পণ্য নিয়ে আসা এসব জাহাজের বিপরীতে গত তিনদিনে অন্তত বিশ কোটি টাকা ফিঙড অপারেটিং কস্ট বাবদ গচ্ছা দিতে হয়। আমদানিকারকরা এই টাকার যোগান দিলেও কার্যতঃ চাপটি নিতে হবে দেশের সাধারণ ভোক্তাদেরই।