এশিয়া কাপের আগে ভারতের সফর পিছিয়ে গেছে আগেই। তাই এখন বিসিবি দেশের মাঠে একটি সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করছে। কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বোর্ডের, তবে টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশকে পাওয়া যাচ্ছে না। সিরিজটি হতে পারে নেপাল বা নেদারল্যান্ডস কিংবা এই ধরনের কোনো দেশের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত বিদেশি কোনো দলকে পাওয়া না গেলে ম্যাচ প্রস্তুতির বিকল্প ভাবনাও আছে বিসিবির। এবারের এশিয়া কাপের চূড়ান্ত ঘোষণা এসেছে শনিবারই। এসিসি ও পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভি জানিয়েছেন, ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসর। সামনের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় রীতি অনুযায়ী এবারের আসর হবে টি–টোয়েন্টি সংস্করণে। এশিয়া কাপের আগে অগাস্টে ভারতের বিপক্ষে দেশের মাঠে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। সূচিও চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু সেই সিরিজ পিছিয়ে চলে গেছে আগামী বছরে। আপাতত তাই দেড় মাস কোনো খেলা নেই বাংলাদেশ দলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজের পর টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেছিলেন, এশিয়া কাপের আগে একটি সিরিজ খেলতে পারলে ভালো হয়। সেই ভাবনা আছে বিসিবিরও। মিরপুর শের–ই–বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার ম্যাচ রেফারি ট্রেনিং ও ওয়ার্কশপের উদ্বোধন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানান বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন। ‘এই সিরিজ আয়োজন নিয়ে আলাপ–আলোচনা হচ্ছে। বেশির ভাগ দেশেরই পূর্ব নির্ধারিত সূচি আছে। আমাদের এখানে ভারতের খেলার কথা ছিল। আমরা সেটিকেই বিবেচনায় রেখেছিলাম যে ওই সিরিজ খেলে এশিয়া কাপে যাব। যেহেতু ভারত আসছে না, আমরা চেষ্টা করছি অন্য কোনো দেশকে আনা যায় কি না। লিডিং কোনো দেশকে এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ তারা তাদের প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত আছে। আমরা অন্য কোনো দেশের সঙ্গেৃ এটা হতে পারে নেদারল্যান্ডস বা নেপাল বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এই মুহূর্তে।’ আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজন শেষ পর্যন্ত সম্ভব না হলে ম্যাচ অনুশীলনের ব্যবস্থা থাকবে। সেটি শুধু এবারই নয়, জাতীয় দলের সব সফরের ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে রাখতে চায় বিসিবি। ‘যদি বিদেশি দল না পাই, আমরা এখন থেকে যেটা ভাবছি যে, আমাদের জাতীয় দল যখন বাইরে খেলতে যাবে, এর আগে আমরা আবশ্যিকভাবে (দেশের মধ্যে) পরবর্তী সম্ভাব্য সেরা দলের সঙ্গে একটি সিরিজ খেলব। তাতে যেটা হবে, জাতীয় দলের প্রস্তুতি যেমন হবে এবং এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পরবর্তী সম্ভাব্য দল যেটি হবে, যারা জাতীয় দলের কাছাকাছি, তাদেরও প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ হয়ে যাবে। আমাদের প্রাথমিক চেষ্টা অবশ্যই থাকবে বাইরে থেকে দল এনে খেলানোর।’ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের পাশেই থাকা বিসিবি সভাপতি যোগ করেন, জাতীয় দলের খেলার সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেটের সমন্বয় করাও তাদের পরিকল্পনায় আছে। ‘আমি একটু যোগ করছি। এখন তো একটা বিরতি পাচ্ছি আমরা। যে কোনো জাতীয় দল যখন খেলে, তার একটা ফ্রেমওয়ার্ক থাকে। যেমন আমাদের দল সামনে এশিয়া কাপ খেলতে যাবে। অবশ্যই আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য হাই পারফরম্যানস ফ্রেমওয়ার্ক এমন হওয়া উচিত, এই মুহূর্তে ঘরোয়া ক্রিকেটও টি–টোয়েন্টি হতে হবে। তার পর কার সঙ্গে খেলছি, পরিপূর্ণ একটা শক্তি–দুর্বলতা–সুযোগ–হুমকি বিশ্লেষণ যদি থাকে, ওই বিশ্লেষণ করার পরে আমরা প্রোগ্রাম ডিজাইন করতে পারব, ট্যাকটিক্যাল ও টেকনিক্যাল ডিজাইন করতে পারব, তার পর কী কী অনুশীলন করতে হবে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে আমরা প্রোগাম করব। সবকিছুই আমরা বাস্তবায়ন করব ধীরে ধীরে। অনেক কিছুই এখন চলছে। তবে ফাহিম ভাইয়ের (নাজমুল আবেদিন) সঙ্গে আমি একমত যে, যে কোনো বড় ইভেন্টের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারটি থাকবে।’ আপাতত সপ্তাহ দুয়েকের ছুটি শেষে অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুতি ক্যাম্প।