উপজেলা পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় করে স্থানীয় সংসদ সদস্যদেরকে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীদের সাথে কোনো ধরনের বিভেদ রাখা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সাথে উপজেলা পর্যায়ে সকল সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কমান্ড।
সেই সাথে অক্টোবরের মধ্যে দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন সম্মেলন, ইউপি নির্বাচনের পর উপজেলা সম্মেলন এবং এরপর জেলা সম্মেলনের নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া সম্মেলন ছাড়া কারো ইচ্ছেমতো অফিসে বসে যখন-তখন কমিটি দেওয়া যাবে না বলেও স্থানীয় এমপি এবং জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের জানিয়ে দিয়েছে হাই কমান্ড। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সংসদীয় আসনের এমপিদের নিয়ে উপজেলা ও জেলার নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দুদিনব্যাপী বৈঠকের গতকাল মঙ্গলবার প্রথম দিন সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, পটিয়া ও আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলার সাথে বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা এই নির্দেশনা দেন। স্থানীয় এমপিদের সাথে উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের দূরত্ব নিরসন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
আজকে (বুধবার) বাঁশখালী, চন্দনাইশ ও বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সাথে বৈঠক রয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় এমপির সাথে বৈঠক হয়। বৈঠকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণ তাদের বক্তব্যে সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থানীয় এমপি দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত না করা, দলের নেতাকর্মীদেরকে গুরুত্ব না দেয়া, দলের বাইরে এমপির আলাদা বলয় তৈরি করাসহ একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। এসময় কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, স্থানীয় প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে দলের নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সংসদ সদস্যদেরকে দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এসময় কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, সম্মেলন ছাড়া যে সব ইউনিয়ন কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা হয়েছে সে সব ইউনিয়নে নতুন কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আগের কমিটি পুনর্বহাল করতে হবে। কোনো ধরনের বির্তকিত ব্যক্তিদের দলে রাখা যাবে না। অন্য দল থেকে কেউ আওয়ামী লীগে যোগ দিলে কোনো পদ দেয়া যাবে না।
বৈঠকের ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান আজাদীকে জানান, আমরা দক্ষিণ জেলার সম্মেলনের ব্যাপারে বলেছি। কেন্দ্রীয় নেতারা আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং উপজেলা সম্মেলন করতে বলেছেন। উপজেলার পর জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আজকে বুধবার সকালে বাঁশখালীর এমপিসহ উপজেলার নেতাদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুপুর ২টায় চন্দনাইশ উপজেলা ও এমপির সাথে এবং বিকাল ৩টায় বোয়ালখালী উপজেলার সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সংগঠনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারি উন্নয়ন কাজে দলের নেতাকর্মীদের সমন্বয় করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. শামসুল হক চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিরু, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম শামসুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি। সভায় উপস্থিত দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতৃবৃন্দ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরো গতিশীল এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।