নেই রেডিওগ্রাফার, অচল জেনারেটরে ভোগান্তি

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই | শনিবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতা উত্তর স্থাপিত মীরসরাই উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটির রোগীর সংখ্যা অনেকগুণ বৃদ্ধি পেলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলাবাসী। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে আধুনিক এক্সরে মেশিন থাকা সত্ত্বেও নেই রেডিওগ্রাফার। তাই রোগীদের বাহির থেকে করতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় এক্সরে। এছাড়া হাসপাতালে একমাত্র জেনারেটরটি দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে থাকায় বিদ্যুত গেলেই অন্ধকারে ঢেকে যায় পুরো হাসপাতাল। আবার ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের থেকে জানা গেছে প্রায় টেস্ট চিকিৎসকগণ বিভিন্ন প্রাইভেট সেন্টার থেকে করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে। সমপ্রতি ভর্তি হওয়া রোগীর অভিভাবক সালমা বেগম বলেন, আমাদের ডাক্তার বারইয়াহাটের নাইটেঙ্গেল থেকে বিভিন্ন রিপোর্ট করাতে বলেছে। আমরা তাই সেখান থেকে করে এনেছি সব। এতে যাওয়া আসার সময় এবং বাড়তি খরচ তো রয়েছে। এদিকে লোডশেডিংয়ের সময় হাসপাতাল জুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। কিছু কক্ষে একটিমাত্র বাল্ব রয়েছে। আবার বিভিন্ন অনেক কক্ষে একটি বাতিও নেই। কোন কোন কক্ষে জানালা দিয়ে যেটুকু আলো আসছে সেটুকুই ভরসা। এরমধ্যেই অনেক চিকিৎসক সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন।

কাটাছরা ইউনিয়ন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা খালেদা বেগম বলেন, চিকিৎসা নিতে এসে টিকেটের জন্যই এক ঘণ্টা লাইনে। আধাঘণ্টা আগে বিদ্যুৎ চলে যাবার পর এখন অন্ধকারেই দাঁড়িয়ে আছি। সরকারি হাসপাতালে এমন অবস্থা দেখে দুঃখ হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনচার্জ ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এক্সরে মেশিনটি খুবই আধুনিক ও ব্যবহারের উপযোগী। কিন্তু পুরো চট্টগ্রামে একজন রেডিওগ্রাফারও খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাই এখানে এক্সরে মেশিন চালানোর কোন লোক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে এই মেশিনটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আর জেনারেটরটি দুই বছর আগে ৭০ হাজার টাকা ভিন্ন খাত থেকে এনে রিপেয়ার করা হয়েছিল, কিন্তু আবার নষ্ট হবার পর সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ ম্যানেজ করতে না পারায় সেটিও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। তবে তিনি আরো কয়েকটি মৌলিক সমস্যার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেগুলো হলো ৫ জন ক্লিনারের পোস্ট থাকলেও আছেন ১ জন ক্লিনার। ভিন্ন ব্যবস্থাপনায় ক্লিনার দিয়ে সারাতে হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। আবার ১ জন সিকিউরিটিও না থাকায় অনেক সময় দিনে বা রাতে নিরাপত্তাহীনতায় চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। এছাড়া হাসপাতালে ২৭ জন ডাক্তার নিয়োগ থাকলেও প্রায় সময় অনেক চিকিৎসকের অনুপস্থিতির বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময় অনেক ডাক্তার বিভিন্ন সেন্টারে দায়িত্ব পালন করছেন। তবুও বিশেষ ছুটি ব্যতিরেকে এখন সবসময় স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকগণ। সকল সংকট সরকারের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি সকলের সামাজিক সহযোগিতা আহ্বান করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে ২ কোটি টাকার বিদেশি সিগারেট জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধচাঁদের বয়স হতে পারে ধারণার চেয়েও অনেক বেশি