কক্সবাজারে ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি কামাল হোসেন ওরফে বাইট্টা কামাল আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে নিহত সবাইকে ‘ডাকাত’ বলে দাবি করেছেন।
তিনি আদালতে বলেন, সাগরে ডাকাতির শিকার ক্ষুদ্ধ জেলেরা ১০ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এরপর তাদের লাশ গুম করার জন্য ট্রলারভর্তি করে সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
গত সোমবার সন্ধ্যায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে বাইট্টা কামাল ও মামলার চার নম্বর আসামি করিম সিকদারকে আদালতে তোলা হলে বাইট্টা কামাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে অপর আসামি করিম সিকদার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান। আসামি বাইট্টা কামাল ও করিম সিকদার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।
কামাল হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন কঙবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ। আদালতে বাইট্টা কামাল দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি কঙবাজার শহরে ছিলেন। তবে ঘটনার বিষয়ে তার ট্রলার থেকে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হয়েছে। এতে জেনেছেন, নিহত ১০ জনই ডাকাতি করতে সাগরে গিয়েছিল। আর এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে কয়েকটি ট্রলারের জেলেরা মিলে ১০ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এরপর ডাকাতিতে ব্যবহৃত ট্রলারে ১০ জনের লাশ ভরে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি ট্রলার থেকে গত ২৩ এপ্রিল ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়। নিহতদের মধ্যে ছয়জনের লাশ শনাক্ত করেছেন তাদের স্বজনেরা। শনাক্ত ছয়জনের লাশ ময়নাতদন্তের পর গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকী চারটি লাশ মর্গে পড়ে আছে। এরপর গত ২৫ এপ্রিল রাতে যোগ হয়েছে মহেশখালীর সোনাদিয়া খালে উদ্ধার হওয়া আরও একটি কঙ্কাল। সব মিলিয়ে পরিচয় পাওয়া যায়নি ৫ লাশের। এগুলোকে নিজেদের স্বজন বলে দাবি করছে ছয়টি পরিবার। পুলিশ এই পাঁচটি লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেছে। তবে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গত ২৫ এপ্রিল বিকালে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ৬৪ জনকে আসামি করে কঙবাজার সদর থানায় একটি মামলা করেন নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এই মামলায় এই পর্যন্ত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার এ মামলায় গ্রেপ্তার ট্রলারের মাঝি আবু তৈয়ূব ও ফজল কাদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। আদালতে তারা বলেছেন, এ ঘটনায় তারা জড়িত নন, তবে তাদের সামনে ঘটনা ঘটেছে। এই দুজনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন কঙবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা। আবু তৈয়ূব ও ফজল কাদের চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কুদুকখালী গ্রামের বাসিন্দা।












