নিলামের গাড়ি কেনাবেচার নামে প্রতারণা,বন্দর কর্মচারীসহ গ্রেপ্তার ৬

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২০ নভেম্বর, ২০২০ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বন্দর হতে খালাস না হওয়া নিলামযোগ্য গাড়ি কেনাবেচার নামে প্রতারণায় জড়িত থাকার অপরাধে বন্দরের কর্মচারীসহ ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নুরুল আবছার, রুহুল আমিন, মো. ইউসুফ, মহিদুল ইসলাম সরকার নজরুল, মোবারক হোসেন সুমন ও আনোয়ার হোসেন। এরমধ্যে নুরুল আবছার চট্টগ্রাম বন্দরের সিকিউরিটি বিভাগের স্থায়ী কর্মচারী। তিনি বন্দর জেটিতে গাড়ির রাখার শেডের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই জেটিতে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করে মো. ইউসুফ ও রুহুল আমিন।
সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা অখালাসকৃত একটি নোয়া মাইক্রোবাস কম দামে কিনে দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে দেন গ্রেপ্তারকৃতরা। এরপর প্রতারিত হয়েছে নিশ্চিত হয়ে বন্দর থানায় মামলা করেন হালিম। বন্দর থানার ওই মামলায় তদন্তে নেমে আমরা ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। বন্দর থানার আরেকটি ঘটনায় সানোয়ার হোসেন নামের এক প্রতারক আগেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের ওই কর্মচারীদের মাধ্যমে সানোয়ার নিজেকে সাখাওয়াত নামে এসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব কাস্টমস পরিচয় দিয়ে প্রতারণার শিকার হালিমের এক বন্ধুকে বন্দর জেটিতে নিয়ে যান। বন্দরে গিয়ে গাড়ি দেখে এসে বন্ধুর মাধ্যমে জেনে একপ্রকার বিশ্বাস করেই হালিম প্রতারক চক্রকে ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা দিয়ে দেন। যদি তারা বন্দরে প্রবেশ করতে না পারতেন তাহলে হয়তো হালিম প্রতারিত হতেন না। তিনি জানান, তদন্তে নেমে আমরা এই মামলায় প্রথমে মহিদুলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। এরপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করি। সানোয়ার আগে থেকে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা আত্মসাতের পর নগরীর জুবিলী রোডে আল ফয়সল হোটেলে বসে তারা টাকা ভাগাভাগি করে। সুমন নেয় ২ লাখ টাকা, মহিদুল এক লাখ ১০ হাজার টাকা এবং বাকি টাকা নেয় সানোয়ার। তিনজনই আসল প্রতারক। চট্টগ্রাম বন্দরের তিন কর্মচারী তাদের প্রতারক সিন্ডিকেটের সদস্য। গাড়ি দেখানোর জন্য হালিমের এক বন্ধুকে বন্দরের জেটিতে নিয়ে যান তিন কর্মচারী। গাড়ি দেখানোর জন্য হালিমের বন্ধুকে বন্দরের অভ্যন্তরে ঢুকানোর জন্য সানোয়ার দুই দফায় ইউসুফকে ৬৬ হাজার টাকা দেয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ৬জনের মধ্যে তিন প্রতারক আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা সকলেই সানোয়ারকে তাদের গ্রুপের লিডার হিসেবে উল্লেখ করেছে। আমরা এখন আদালতে সানোয়ারকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো ও রিমান্ডের আবেদন করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের কর্মবিরতি অব্যাহত
পরবর্তী নিবন্ধসদরঘাটে আবাসিক হোটেলে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু