প্রতিদিন রাতে ঘুমে অচেতন নুর মোহাম্মদকে যৌন নির্যাতন করতেন নেশাগ্রস্ত নুর নবী। ঘটনার দিন নির্যাতনের এক পর্যায়ে নুর নবীকে সজোরে লাথি মারেন নুর মোহাম্মদ। এতে বিছানা থেকে পড়ে মেঝেতে থাকা কাঠে লাগানো কাঁটা তারে মাথায় আঘাত পেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে এক পর্যায়ে নুর নবীর গলায় বৈদ্যুতিক তার পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন নুর মোহাম্মদ।
গতকাল শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদুল হকের আদালতে হত্যার সত্যতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন আসামি নুর মোহাম্মদ।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে সলিমপুর ইউনিয়নের সাংগু অঙিজেন রোড় এলাকার একটি কালো তেলের ডিপো থেকে গলায় বৈদ্যুতিক তার প্যাঁচানো অবস্থায় পড়ে থাকা মো. নুর নবী (৬০) নামে একজনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ডিপোতে থাকা নুর মোহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানা হেফাজতে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নুর মোহাম্মদের কথাবার্তায় বেশকিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। সে এটিকে ডাকাতির ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদ হত্যার সত্যতা স্বীকার করে। সে জানিয়েছে, গত ৮ মাস পূর্বে নুর নবীর সাথে তার পরিচয় হয়। তার সাথে আলাপের একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদকে বাইরের বাসা ছেড়ে দিয়ে এক হাজার টাকা ভাড়ায় তার সাথে রাতে ডিপোতে থাকতে বলেন নুর নবী।
‘ডিপোতে ১০–১৫ দিন থাকার পর একদিন রাতে পেপসি খাওয়ানোর কথা বলে নুর মোহাম্মদকে নেশা জাতীয় পানীয় পান করান নুর নবী। পেপসি খেয়ে সে গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়লে তাকে বলাৎকার করেন নুর নবী। সেদিনের পর থেকে প্রায় রাতেই নেশা করে এসে নুর নবী তাকে বলাৎকার করতো। বুধবার গভীর রাতে ঘুমন্ত নুর নবীকে বলাৎকার করার সময় সে ব্যথা সইতে না পেরে সজোরে লাথি মারে। এতে নিচে ছিটকে পড়ে কাঠের সাথে লাগানো তার কাটায় আঘাত পেয়ে আহত হয় নুর নবী। এরপর গলায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার সাথে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য ডাকাতদের দ্বারা হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে একটি গল্প তৈরি করে নুর নবীর ছেলেদের খবর দেয়।
