বিনিয়োগকৃত টাকা সুদে-আসলে ফেরত দেয়ার পর আরও টাকা দাবি করে। অতিরিক্ত সে টাকা না দেয়ায় শুরু করে নির্যাতন। প্রতিনিয়ত আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি, মানসিক নির্যাতন ছাড়াও আমাকে নির্যাতন, আমাদের বাসায় আক্রমণ, আমার মেয়েকে অপহরণ, আমার স্বামীকে খুন করবে বলে অনেকবার হুমকি প্রদান করে। এসব থেকে বাঁচতে আমার স্বামী আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে। যা আমার স্বামী আত্মহত্যার আগে সুসাইড নোটে উল্লেখ করে গেছেন। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী। তিনি অভিযোগ করে বলেন- ঘটনার আগের দিন (৫ এপ্রিল) আসামিদের ভাড়া করা সন্ত্রাসী কথিত কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রাসেল পরিচয়ে একটি গ্রামীনফোন নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাঁর স্বামীকে জীবননাশের হুমকি প্রদান করে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন- জীবদ্দশায় তারা(জাবেদ ইকবাল, পারভেজ ইকবাল, সৈয়দ সাকিব নাইম উদ্দিন),তাদের সহযোগী ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাঁর জীবনকে বিষিয়ে তুলে। এ বিষয়ে আমরা পাঁচলাইশ থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা (মামলা নং ৭ (৯) ২১) করেছি। সংবাদ সম্মেলনে ইশরাত জাহান বলেন, আমার স্বামীর নিকট আত্মীয় (ফুফাতো ভাই) হন জাবেদ ইকবাল, মধ্যম হালিশহরের পারভেজ ইকবাল, পাঁচলাইশের সৈয়দ সাকিব নাইম উদ্দিন। এদের সাথে ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যবসার সূত্রে ২৫ কোটি টাকা লেনদেন করেন আমার স্বামী। এর বিপরীতে লভ্যাংশসহ পরিশোধ করেন ৩৮ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের পর থেকে তারা আরও টাকা দাবি করতে থাকে। এ জন্য তারা ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে আমার স্বামীকে প্রচন্ড চাপ এবং হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সৈয়দ সাকিব নাইম উদ্দিনের পাঁচলাইশের এমএন প্যালেসে। সেখানে অস্ত্রের মুখে শারীরিক নির্যাতন করে জোরপুর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া ছাড়াও আমার স্বামী, আমার ও আমার মেয়ের পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। যা আজ পর্যন্ত ফেরত দেয়া হয়নি। ২০১৯ সালে আমার হিলভিউর বাসায় হামলা চালায় জাবেদ ইকবাল,পারভেজ ইকবালসহ সন্ত্রাসীরা। যা মামলা পর্যন্ত গড়ায়।আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আপনাদের মাধ্যমে আমার স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিচার দাবি করছি। এতে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদের মা নুর নাহার বলেন, আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। যাদের প্ররোচনায় আমার সন্তান আত্মহত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই। উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল পাঁচলাইশ থানাধীন হিলভিউ আবাসিক এলাকার নাহার ভিলা নামের একটি ভবন থেকে সিলিংফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের ভাষ্য মতে, আত্মহত্যার আগে আব্দুল মোরশেদ একটি সুসাইড নোট লিখে গেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আর পারছি না, প্রতিদিন একবার করে মরছি, কিছু লোকের অমানসিক প্রেসার আমি আর নিতে পারছি না। প্লিজ, সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমার জুমকে সবাই দেখে রেখ। আল্লাহ হাফেজ’