চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংস হয়ে উঠেছে পরিবেশ। প্রতিদিনই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৫৩টি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। এই পর্যন্ত নির্বাচনী সংঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। প্রতিটি অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তিনি জানান, নির্বাচনী পরিবেশকে আমরা কোনো অবস্থাতেই অস্থিতিশীল হতে দেব না। নির্বাচনী আচরণবিধি যেই ভঙ্গ করবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। এরমধ্যে যেখানেই সংঘাত-সংঘর্ষের খবর আমরা পাচ্ছি, সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিচ্ছি। এদিকে হঠাৎ করে নির্বাচনী পরিবেশ অশান্ত হতে থাকায় জনমনে আতংক বাড়ছে। শংকিত হয়ে উঠছেন ভোটাররা। গত ৪-৫ দিনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে দেখা গেছে, চসিক নির্বাচনের ক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে নগরীতে বাড়ছে নির্বাচনের উত্তাপ। সেই উত্তাপে প্রতিদিনই যোগ হচ্ছে সরকারি দলের নির্বাচনী কার্যালয়ে ও মিছিলে হামলার অভিযোগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নগরীর পাহাড়তলী কাজির দীঘিতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর অফিসে হামলায় তিনজন আহত এবং পাঁচলাইশ শোলকবহর এলাকায় যুবলীগের মিছিলে হামলায় ককটেল সদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণের অভিযোগ করছেন সরকারি দলের কর্মী সমর্থকরা। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, সবই সাজানো। পাহাড়তলীর ঘটনায় পুলিশ বলছে, ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি। শোলকবহরের ঘটনায় পুলিশ বলছে, যুবলীগের মিছিলে হামলার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৪টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে গত বুধবার গভীর রাতে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ বিএনপির অফিসের সামনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাবেয়া রহমান লেইনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় কাজীর দেউড়ি এলাকায় আওয়ামীলীগ-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ককটেল বিস্ফোরণ-বিক্ষোভ-ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। এর আগে গত বুধবার নগরীর বলিরহাট এলাকায় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে গণসংযোগের সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ এই হামলার জন্য যুবদলের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে। অপরদিকে একই ধরনের অভিযোগ করেছে যুবদল। গতকাল বিকেলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ১২ জানুয়ারি ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে নির্বাচনী সংঘাতে প্রাণ হারান এক কাউন্সিলরের সমর্থক।