নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জ না, পিআর পিআর করা চ্যালেঞ্জ : সালাহউদ্দিন

| মঙ্গলবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৫ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন দাবিদাওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা হলে সেটিকেই ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জ না, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায় বিভিন্ন কায়দাকানুনের মধ্য দিয়ে, সেটাই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। অথবা বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে আলোচনায় এবং রাস্তায় একই ইস্যুতে আন্দোলন করে যারা একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, জাতির মধ্যে সেগুলোই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। খবর বিডিনিউজের।

যারা ‘পিআর পিআর’ করে জনগণকে বা বাংলাদেশকে একটা অস্থিতিশীল সরকার ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যেতে চায়, সেগুলো হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘নাগরিক যুব ঐক্য’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচনকে যাতে অসুবিধার মধ্যে না ফেলে, যাতে জনগণকে বিভ্রান্তির মধ্যে না ফেলে সেই জন্য নাকি দুইটা ব্যালট দিলে একই দিনে অসুবিধা হবে, এইটা কী রকম প্রশ্ন আমি বুঝলাম না। এখন তো আমরা তিনটা ব্যালটে ভোট দিতে অভ্যস্ত। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে চেয়ারম্যানের জন্য, মহিলা মেম্বারের জন্য একটা, পুরুষ মেম্বারের জন্য একটা দিচ্ছি না? যদিও সেই নির্বাচনগুলো ফ্রড হয়েছে, বাট দিচ্ছি তো। উপজেলা নির্বাচনের উপজেলা চেয়ারম্যানের জন্য একটা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য একটা, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য একটা আমরা দিচ্ছি, সিটি করপোরেশনেও এরকম দুইতিনটা ব্যালট থাকে। সুতরাং আমাদের জনগণ প্রস্তুত, গণভোটের জন্য যে ব্যালটটা হবে, সেই ব্যালটে আমাদের সাধারণ জনগণের বোঝার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রচারণা দিতে পারেএই যে লাল চিহ্নের মধ্যে টিক দিলে ‘না’, গ্রিন চিহ্নের মধ্যে ঠিক দিলে ‘হ্যাঁ’। এরকমও হতে পারে, খুব সিম্পল করা যায়। তিনি বলেন, গণভোটের প্রশ্ন তো জনগণের সামনে উন্মুক্তই থাকবে যে, জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে, অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে, তার পক্ষে আছি কি নাই। হ্যাঁ অথবা না। আমরা সিম্পলের দিকে যাব, এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। যারা এটাকে জটিল করতে চাচ্ছে তাদেরকে আল্লাহ হেদায়েত নসিব করুন। জাতীয় জীবনে যেন আমরা একটা সুন্দর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অবাধ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক স্থিতিশীল সরকার পেতে পারি, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য স্থিতিশীলতা আনতে পারি, সেজন্য আমরা সবাই দোয়া করতে পারি।

এ বিএনপি নেতা বলেন, নির্বাচনের বিষয়গুলোর জন্য সাবজেক্ট কী অবজেক্ট কী? জনগণ, ভোটার, নির্বাচন কমিশন, পলিটিক্যাল পার্টিসমূহ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বর্তমান পুলিশের যে অবস্থা সবাই সন্দেহ পোষণ করে তাদের দিয়ে এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কিনা। এই বিষয়ে সবার একটু প্রশ্ন আছে, কারণ পুলিশ বাহিনীর ‘টোটাল মোরালিটি’ সেটা এখনো সেই আগের জায়গায় ফেরত আসেনি। কিন্তু তাদের সহায়তার জন্য এক লক্ষেরও বেশি সেনাবাহিনীর সদস্যগণ কাজ করবেন, সেটি ইতোমধ্যে সেনাপ্রধান এবং সরকার প্রকাশ করেছে। তাদেরকে সে বিষয়ে ট্রেনিংও দেয়া হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীর বাইরেও যেগুলো সহযোগী বাহিনী আছে, আনসারভিডিপিসহ অন্যদেরও প্রশিক্ষণ চলছে।

জনগণ এইবার এত বেশি উদগ্রীব হয়ে আছে, উন্মুখ হয়ে আছে একটা সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য, তারাই মূল ভূমিকা পালন করবে। এইখানে কেউ অনিয়ম করার চেষ্টা করলে জনগণ পাহারা দেবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী করার গুরত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা যদি এই ফ্যাসিবাদীবিরোধী জাতীয় ঐক্যটা শক্তিশালী করি সমুন্নত রাখি এবং এই গণতান্ত্রিক শক্তিটাকে আমরা সম্মান করি। আমাদের মধ্যে বিতর্ক হবে। কিন্তু আমরা যদি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যটাকে সমুন্নত রাখি এবং শক্তিতে পরিণত করি, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদের উৎপত্তিই হবে না।

আমি এটাকেই মূলত আমাদের চ্যালেঞ্জের প্রধান জায়গা মনে করি। আমরা সেটা সবাই সম্মিলিতভাবে সারা জাতি মোকাবেলা করব। আশা করি আমরা সফল হব। আর সকল রাজনৈতিক দলের কাছে একটা অনুরোধ যে আমরা যদি একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চাই, ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর যে রাজনৈতিক দল হিসেবে তার বিচারিক ব্যবস্থা সেটা যেন আমরা ত্বরান্বিত করার জন্য সবাই উদ্যোগী হই।

নাগরিক যুব ঐক্যের প্রধান সমন্বয়কারী মাহফুজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সমন্বয়কারী ফারুক হোসেন খান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার গবেষণায় চিকিৎসার নোবেল
পরবর্তী নিবন্ধভারতীয় চালে বাজার সয়লাব