নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার নিবন্ধনের প্রকল্প কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ চুরি ও ওই ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ইসি সচিবালয়ের পরিচালকসহ চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার এজাহারে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ওই মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। মামলায় দণ্ডবিধির ২০১, ৪০৯, ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। মামলার আসামিদের একজন ইসি সচিবালয়ের পরিচালক খোরশেদ আলম। ঘটনার সময়ে তিনি চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। অপর আসামিরা হলেন কক্সবাজারের রামু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক উচ্চমান সহকারী মাহফুজুল ইসলাম, পটিয়া নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী ও জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক রাসেল বড়ুয়া এবং পাঁচলাইশ নির্বাচন অফিসের সাবেক টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মোস্তফা ফারুক।
অন্যদিকে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূয়া পরিচয়, নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে রোহিঙ্গা নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসের তিন কর্মচারী, দুজন দালাল ও দুজন রোহিঙ্গাসহ ৭ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা হয়েছে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ।
গতকাল বুধবার বিকেলে ওই মামলাটিও দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন, জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক মো. নুর আহম্মদ, কক্সবাজার সদর নির্বাচন অফিসের সাবেক অস্থায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নাঈম উদ্দীন, কক্সবাজারের ওবাইদুল্লাহ, কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানাধীন ইসলামাবাদ পূর্ব গোমদণ্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান, ফয়েজ উল্লাহ এবং তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন।
এই মামলা দুটিসহ এ নিয়ে গত তিন দিনে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা, এনআইডি দেওয়া ও ল্যাপটপ আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে ভোটার করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, দালাল ও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে আসামি করে ৫টি মামলা হয়েছে।