নিজেদের মাঠে টানা পাঁচ জয়ের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিক দল চিটাগাং কিংস। শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে। কিন‘ পরের দুই ম্যাচে হেরে গেল । চতুর্থ ম্যাচে আবার ফিরেছিল জয়ের ধারায়। সংগত কারনে প্রত্যাশা ছিল শেষ ম্যাচে জিতে নিজেদের মাঠের পর্ব শেষ করবে চিটাগাং কিংস। সে প্রত্যাশার অবশ্য যৌক্তিক কারণও ছিল। এই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল হারতে হারতে তলানিতে চলে যাওয়া ঢাকা কৗাপিটালস। নিজেদের মাঠে শেষ ম্যাচে সেই ঢাকাকে হারাতে পারলণা চিটাগাং। উল্টো হেরে গেল পয়েন্ট টেবিলের তলানির দলটির কাছে। চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে রানের ফোয়ারা ছুটাতে পারলনা চিটাগাং কিংস। বল হাতেও বিবর্ণ ছিল স্বাগতিকদের বোলাররা। আর তাতেই ফল যা হওয়ার হয়েছে। শেষ ম্যাচে হেরে নিজেদের মাঠের পর্ব শেষ করতে হলো কিংসকে। গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চিটাগাং কিংসকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। গতকালের হারের ফলে ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেল চিটাগাং কিংস। আর ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পাওয়া বরিশাল উঠে এলো দ্বিতীয় স্থানে। অপরদিকে গতকালের এক জয়ে এক লাফে চতুর্থ স্থানে উঠে এলো ঢাকা ক্যাপিটালস। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬ঠ আরো দুই দলের পয়েন্ট ৬। তাদের মধ্যে খুলনা ৭ ম্যাচে ৬ আর রাজশাহী ৯ ম্যাচে। তবে রান রেটে এগিয়ে থাকায় চতুর্থ স্থানে ঢাকা। বলা যায় পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স’নটি নিয়ে দারুন লড়াই চলছে। গতকালের ম্যাচটি ছিল ঢাকার জণ্য প্রতিশোধের। সে সাথে বাঁচা মরারও। সে লড়াইয়ে জিতে ঢাকা ক্যাপিটালস প্রথম দেখায় হারের প্রতিশোধ নিল আর চিটাগাং এর এগিয়ে থাকা হলোনা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে টানা ছয় ম্যাচে হারের পরের চার ম্যাচের তিনটিতেই জিতল খালেদ মাহমুদ সুজনের দল। এখন তারাও শেষ চারের আশা করতেই পারে। টসে জিতে ব্যাট করতে নামা চিটাগাং কিংসের শুরুটা একেবারে মন্দ হয়নি। ওসমান খানকে ছাড়াই খেলতে নামা চিটাগাং ওপেনিংয়ে পাঠায় নাঈম ইসলাম এবং আফগান ক্রিকেটার জুবাইরউল্লাহ আকবরীকে। ৪০ রান করে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ১৯ বলে ২৩ রান করা আকবরীকে বোল্ড করে এ জুটি ভাঙ্গেন মোসাদ্দেক সৈকত। দ্বিতয়ি উইকেটে ক্লার্ক এবং নাঈম মিলে আরো ৪৯ রান যোগ করেন। তখন মনে হচ্ছিল বড় স্কোরের দিকে এগুচ্ছে চিটাগাং। কিন্তু এজুটি ভাঙ্গার পর আর বড় কোন জুটি গড়ে তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা। ১৯ রান করা ক্লার্ককে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন নাজমুল অপু। এক বল পর হোসাইন তালাতকেও ফেরান অপু। পরের ওভারে মোসাদ্দেকের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন চিটাগাং এর পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরার নাঈম ইসলাম। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা নাঈম এই ম্যাচেও হাঁটছিলেন সেদিকে। কিন্তু ৪৪ রানে তাকে থামিয়ে দিল মোসাদ্দেক। এররপ দলের হাল ধরার কথা যাদের সেই অধিনায়ক মিথুন, শামীম হোসেন এবং পাকিস্তানী হায়দার আলি কেউই ইনিংস বড় করতে পারেনি। ফলে ১৪৮ রানে থামে চিটাগাং কিংসের ইনিংস। শামীম করেন ১৬ বলে ১৫, হায়দার আলি ১১ বলে ১৬ এবং অধিনায়ক মিথুন
অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১২ রান করে। ঢাকা ক্যাপিটালসের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মোসাদ্দেক হোসেন এবং নাজমুল ইসলাম অপু। ১৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং লিটন দাশ মিলে তুলে নেন ৭৫ রান। ২৮ বলে ২৫ রান করা লিটন দাশকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন হুসাইন তালাত। কিন‘ যতই সময় যা”িছল ততই ধারালো হ”িছল তানজিদ তামিমের ব্যাট। দ্বিতীয় উইকেটে তানজিদকে বেশিক্ষন সঙ্গ দিতে পারেনি মুনিম শাহরিয়ার। ১৮ বলে ১২ রান করে আলিস আল ইসলামের বলে বোল্ড হন মুনিম। তবে তানজিদ যেন পন করেই নেমেছিলেন তিনি ফিরবেননা। তাইতো তাকে ফেরাতে পারেনি চিটাগাং এর কোন বোলার। দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেছেন তানজিদ। সাব্বির রহমানকে নিয়ে ৩৯ রান যোগ করে দলের জয় নিয়ে ফিরেন তানজিদ। আরো একটি সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে পাওয়া হলোনা তানজিদের রানের অভাবে। ৯০ রানে অপরাজিত থাকেন তানজিদ। ৫৪ বলের ইনিংসে ৩টি চার এবং ৭টি ছক্কা মেরেছেন। সাব্বির রহমান অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ১৪ রান করে। গতকালের ৯০ রানের ফলে এবারের বিপিএলে তানজিদের রান হলো ৪২০। যেখানে ৩টি হাফ সেঞ্চুরি আর একটি সেঞ্চুরি রয়েছে। রান সংগ্রহের দিক থেকে সবার উপরে তানজিদ। গতকাল দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেণ তানজিদ।