আনোয়ারায় পাঁচ হাজার শতক জমিতে ৬০০ শয্যার হাসপাতাল করছে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড)। আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত করা ও বিদেশ নির্ভরতা কমাতে কেইপিজেড নিজেদের জায়গায় এই হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছে। হাসপাতালের সাথে থাকবে বিশ্বমানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও নার্সিং কলেজ। কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে ও কোরিয়ান ইউএনসি হাসপাতালের কারিগরি সহযোগিতায় এই হাসপাতাল বাস্তবায়ন করছে।
এই হাসপাতালে থাকবে বিশ্বের সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি। হাসপাতালে থাকবে হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং ব্যবস্থা, দুরারোগ্য রোগীর সাথে পরিবারের রাত্রি যাপন সুবিধা, উন্নত যাতায়াত সুবিধাসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা। এই প্রকল্পের আওতায় ১শ শয্যার একটি পাইলট হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে এ হাসপাতালে কোরিয়ান ইপিজেডে কর্মরত ৩০ হাজার শ্রমিক–কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার সুফল ভোগ করবেন। নির্মাণাধীন পাইলট হাসপাতালে নার্সিং কলেজ ভবনসহ তিনটি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। এ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগ, নিউরো মেডিসিন, কার্ডিওলজি বিভাগ, গ্যাস্ট্রোলজি, সার্জারি, অর্থোপেটিক সার্জারি, গাইনি বিভাগ, শিশু, ইএনটিসহ ১৩ ধরনের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
কোরিয়ান এঙপোর্ট প্রসেসিং জোনের (কেইপিজেড) উপ–মহাব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমান জানান, আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি দূর করতে এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিদেশ নির্ভরতা কমাতে কেইপিজেড পাঁচ হাজার শতক নিজস্ব জমিতে ৬শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর এই হাসপাতাল নির্মাণ কাজের ওপেনিং গ্রাউন্ড অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে এ হাসপাতালের সাথে নির্মিত হবে বিশ্বমানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও নার্সিং কলেজ। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। হাসপাতালটি চালু হলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরো জানান, দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে সব ধরনের রোগীর এখানে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। বাংলাদেশের আপামর জনগোষ্ঠী ছাড়াও বিশ্বের সব দেশের জন্য চিকিৎসা সেবা উন্মুক্ত থাকবে। উন্নত চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, হেলিপ্যাড সুবিধাসহ সারাদেশের সাথে থাকবে এ হাসপাতালের আধুনিক সড়ক নেটওয়ার্ক। তাছাড়া বর্তমানে ১০০ শয্যার একটি পাইলট হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। জানুয়ারিতে এটির সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। কোরিয়ান ইপিজেডের ৩০ হাজার শ্রমিক কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ এ পাইলট হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা পাবেন।
প্রস্তাবিত হাসপাতালের (সিও) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এটিএম সাইফুল ইসলাম জানান, চিকিৎসা নিতে কোনো রোগীকে বিদেশ যেতে হবে না। এই হাসপাতালে সবধরনের জটিল রোগী বিশ্বমানের আধুনিক চিকিৎসা সেবা লাভ করবেন। বিশ্বের উন্নত দেশের আদলে এখানে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত ও নিশ্চিত করা হবে। আধুনিক চিকিৎসা সেবায় বিদেশ নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি এ হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবা রক্ষায় দেশে বড় ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।