নিখোঁজের দ্বিতীয় দিনেও সন্ধান মেলেনি আলিফের

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর বাকলিয়া সৈয়দ শাহ রোডের আজিজিয়া তাদরিবুল মাদ্রাসা ভবনের ছাদ থেকে নিখোঁজ ছাত্র ১০ বছরের আলিফকে দ্বিতীয় দিনেও খুঁজে পায়নি ফায়ার সার্ভিস। ওই দিনের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে তাকে মাদ্রাসার ছাদে উঠতে দেখা গেছে। সেই হিসেবে পেছনে থাকা নালায় পড়ে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছে বলে ধারণা করছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকার আজিজিয়া মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় ওই শিশু। বুধবার দুপুরের পর থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে শিশুর স্বজনরা এসে ভীড় করেন মাদ্রাসায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আলিফের বাড়ি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানার চকবাজারে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ রাসেল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দনপুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে ওই শিশু নিখোঁজ। সিসিটিভিতে তাকে ছাদে উঠতে দেখা গেছে। তবে ছাদ থেকে আর নামেনি। তাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, সে মাদ্রাসার পেছনে থাকা পাইপ দিয়ে নামার চেষ্টা করার সময় হয়তো নালায় পড়ে গেছে। কারণ সেখানে আনুমানিক ২০ ফুট প্রস্থের একটি নালা আছে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ হাইড করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে শিশু ছাত্রটির স্বজনরা এসে মাদ্রাসায় ভীড় করেন। তারপর খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশও যায়। আমরা নালায় শিশুটিকে খুঁজছি।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, স্বজনদের অভিযোগের পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে চাক্তাই খালে ৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালান ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। আবর্জনার কারণে অভিযানে বেগ পেতে হয় তাদের।

আলিফের মামা জয়নাল আবেদীন রাসেল বলেন, আলিফ এক বছর আগে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সে নাজারা শেষ করে হেফজএ ভর্তি হয়েছে। ছুটি কাটিয়ে গত ২৮ আগস্ট সে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ফিরেছে। তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসাটি ভবনের পাঁচ তলা থেকে সাত তলা পর্যন্ত তিনটি ফ্লোর।

মাদ্রাসার হুজুর জানান, সাত তলা থেকে নামতে হলে পেছনের পাইপ দিয়েই নামতে হবে। কিন্তু সে আদৌ নালার পানিতে পড়েছে কিনা তা তাদের জানা নেই। ফায়ার সার্ভিসও নিশ্চিত না।

বাকলিয়া থানার এসআই মাহাবুব বলেন, দুপুরে আলিফের বাবা থানায় এসে জানান তাঁর ছেলে নিখোঁজ। আমরা আলিফের মাদ্রাসায় এসেছি। এখন পর্যন্ত তার কোনো হদিস মেলেনি। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় মাদ্রাসার পিছনে থাকা নালায় পড়ে গেছে।

নিখোঁজ আলিফের বাবার বরাতে তিনি আরও বলেন, এর আগেও একবার আলিফ মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায়। তখন বিকেলে তাদের বাড়িতে চলে গিয়েছিল। তবে এবার এখনও তার সন্ধান মেলেনি।

জানা গেছে, দুই মাস আগে এ মাদ্রাসা থেকে আরও দুই শিক্ষার্থী পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তবে আলিফ নামের এই শিক্ষার্থী পালিয়েছে নাকি ওই খালে পড়েছে সে বিষয়ে এখনো কেউ নিশ্চিত না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে মিললো স্কুলছাত্রের মরদেহ
পরবর্তী নিবন্ধবিচার বিভাগে আস্থা হারালে আসবে সর্বনাশা দিন