নর্থ সী’র বায়ু খামার এবং ইউরোপের দেশগুলোর যোগাযোগের তার ধ্বংস করতে নাশকতার পরিকল্পনা করার নতুন অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সরকারি সমপ্রচারমাধ্যমগুলোর যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বলা হয়েছে, নর্থ সী–তে মাছ ধরার ট্রলার এবং গবেষণা জাহাজের ছদ্মবেশে রাশিয়ার জাহাজের একটি বহর রয়েছে। খবর বিডিনিউজের। এসব জাহাজ পানির নিচে নজরদারি সরঞ্জাম বহন করে সম্ভাব্য নাশকতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানের ম্যাপ তৈরি করছে। বিবিসি জানতে পেরেছে যে, রাশিয়ার জাহাজগুলো এই পরিকল্পনা অংশ হিসাবে যুক্তরাজ্যের জলসীমার আশেপাশে চলাফেরা করছে– এ ব্যাপারে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা ওয়াকিবহাল। এ ধারাবাহিক তদন্ত প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব বুধবার ডেনমার্কের ডিআর, নরওয়ের এনআরকে, সুইডেনের এসভিটি ও ফিনল্যান্ডের ওয়াইএলই টিভিতে সমপ্রচার করা হবে। ডেনমার্কের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে পরিপূর্ণ সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই নাশকতার পরিকল্পনা প্রস্তুত করে রাখছে মস্কো। নরওয়ের গোয়েন্দাপ্রধান সমপ্রচারমাধ্যমগুলোকে বলেছেন, নাশকতার জন্য মূল সাইটগুলোর ম্যাপ তৈরির কাজটি রাশিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে এবং মস্কোর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে একাজ পরিচালিত হচ্ছে। সমপ্রচারমাধ্যমগুলো বলছে, তারা রাশিয়ার যোগাযোগে আড়িপেতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নর্ডিক দেশগুলোর জলসীমায় ছদ্মবেশী জাহাজগুলো চলাচলের আভাস পেয়েছে। জাহাজের অবস্থান যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য সেগুলোর ট্রান্সমিটার বন্ধ করা ছিল। তদন্ত প্রতিবেদনে ‘অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমিরস্কি’ নামের একটি রুশ জাহাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারিভাবে এটি একটি ডুবো গবেষণা বিষয়ক জাহাজ। কিন্তু প্রতিবেদনে অভিযোগ করে বলা হয়েছে যে, এটি আসলে রাশিয়ার একটি গুপ্তচর জাহাজ। তদন্তে যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের উপকূলের কাছে সাতটি বায়ু খামারের আশপাশে জাহাজটির গতিবিধি শনাক্ত করতে একজন বেনামি ব্রিটিশ রয়্যাল নৌ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুর খামার ও লোটার রয়েছে এমন অঞ্চলের কাছে পৌঁছানোর পথে জাহাজের গতি ধীর হয়ে যায়। জাহাজটি রাডারে ধরা পড়া এড়াতে ট্রান্সমিটার বন্ধ রেখে এক মাসের জন্য যাত্রাপথে ছিল। একজন প্রতিবেদক ছোট্ট একটি নৌকায় চড়ে জাহাজটির কাছে যাওয়ার পর তিনি এক মুখোশধারী ব্যক্তির মুখোমুখি হন, যার কাছে একটি সামরিক অ্যাসল্ট রাইফেল ছিল বলে প্রতীয়মান হয়েছে।