নালা নর্দমায় পড়ে থাকা পলিথিনের বর্জ্য থেকে কোটি কোটি টাকার পলিথিন তৈরি হচ্ছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পাঁচ শতাধিক কারখানায় গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কারখানায় ব্যবহৃত মোটা পলিথিন রিসাইক্লিং করে পুনরায় প্লাস্টিক তৈরি করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, দেশের কয়েক হাজার গার্মেন্টস ও প্যাকেজিং কারখানায় বিভিন্ন সাইজের পলিথিন (প্লাস্টিকের মতো স্বচ্ছ এবং পুরু, নিষিদ্ধ নয়) ব্যবহৃত হয়। এসব পলিথিন ব্যবহারের পর নানা ঘাট ঘুরে নালা নর্দমায় পাওয়া যায়। নালা পরিস্কারসহ বর্জ্য সংগ্রহকালে এসব পলিথিন সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে পলিথিনগুলো পানিতে ভালো করে ধুয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি করা হয় পলি দানা। এই দানা আবারো প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হয় পলিথিন। কোন কোন কারখানায় রোলে প্লাস্টিক তৈরি হয়। কোন কোন কারখানায় তৈরি হয় ব্যাগ। স্বচ্ছ এসব ব্যাগ দিয়ে দোকানে দোকানে পণ্য বিক্রিসহ নানা কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এছাড়া রোলের পলিথিন ত্রিপলের মতো ব্যবহার করা হয় কুতুবদিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়াসহ বিস্তৃত এলাকার লবণ মাঠে। পুরো প্রক্রিয়ার সাথে কয়েক হাজার মানুষ জড়িত। তারা কোটি কোটি টাকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
চট্টগ্রাম নগরীর কোরবানীগঞ্জ, রাজাখালী, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও বলুয়ারদীঘির পাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট ৫০টির মতো কারখানা রয়েছে। এক একটি কারখানায় চল্লিশ পঞ্চাশজন মানুষ কাজ করেন। বর্জ্য থেকে পলিথিন সংগ্রহ করে পানিতে ধুয়ে রিসাইক্লিং করে পুনরায় পলিথিন উৎপাদন করা হয়। এ বিশাল কর্মযজ্ঞে জড়িত চট্টগ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন কারখানা মালিক গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, বর্জ্য থেকে যে পলিথিন সংগ্রহ করা হয় তা প্রতি কেজি মানভেদে ৩০ থেকে ১০০ টাকা। এ বর্জ্য পরিস্কার করে কারখানায় প্লাস্টিক দানা তৈরি করা হয়। প্রতি বস্তা (২৫ কেজি) দানা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। উক্ত দানা ব্যবহার করে অনুমোদিত সাইজের পলিথিন (প্লাস্টিকের মতো স্বচ্ছ ও পুরু) উৎপাদন করা হয়। কিছুটা লাভ করে মান অনুযায়ী এগুলো বিক্রি করা হয়। চট্টগ্রামে পঞ্চাশটিরও বেশি কারখানায় এ ধরনের পলিথিন উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম চলে। বর্জ্য থেকে সোনা কুড়ানোর মতো প্লাস্টিক কুড়ানো হয়। এতে অনেকেরই ভাগ্য ফিরছে বলেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেন।