নালার উপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার সময় মার্কেটের দেয়াল ভাঙা হচ্ছে, এমন দাবি করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অভিযানে বাধা দিয়েছেন নগরের কল্লোল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। গতকাল দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। এসময় ব্যবসায়ীরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার আশ্বাসে শান্ত হন তারা। অবশ্য এর আগেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নালা দখলমুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, নগরীর পাঁচলাইশ থানার প্রবর্তক মোড়ের পাশে অবস্থিত কল্লোল সুপার মার্কেট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) জাহানারা ফেরদৌস। অভিযানের শুরুতে নালার উপর থাকা স্থাপনা ভেঙে দেয়া হয়। এসময় কয়েকজন ব্যবসায়ী এসে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাবি করেন, উচ্ছেদে নিয়োজিত কর্মীরা মার্কেটের দেয়াল ভেঙে দিচ্ছে।
একপর্যায়ে অন্য ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে শুরু করে। তারা মার্কেটের সামনের সড়কে ব্যারিকডে দিয়ে দেয়। এসময় ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাঁচলাইশ থানা পুলিশ বুঝিয়ে শান্ত করে। পরে বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলোচনার আশ্বাস দিলে শান্ত হন ব্যবসায়ীরা।
কল্লোল সুপার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস খান ইমু দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের কোনো নোটিশ দেয়নি। নোটিশ ছাড়াই মার্কেটের পাশের ড্রেন সংস্কারের নামে অভিযান চালায়। কিন্তু ড্রেনে হাত না দিয়ে মার্কেটের মূল ভবনের দেয়াল, দোকান, সিঁড়ি, জেনারেটর এবং এসি ভেঙে দেয়। এতে আমাদের ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, মার্কেট নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
উচ্ছেদে বাধা দেয়ার চেষ্টা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই জড়ো হয়েছে। রাস্তায় ব্যারিকেড দিই। আমরা মানববন্ধন করতে চেয়েছি। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) ১০টায় বিষয়টি নিয়ে আমাদের সাথে বৈঠক করার আশ্বাস দেয়ায় করিনি।
এ বিষয়ে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা নালা দখলমুক্ত করেছি। নালার উপর তারা স্ল্যাব দিয়ে জেনারেটর বসিয়েছিল। তাদের বলেছি সরিয়ে নিতে। রাস্তায় ব্যারিকেড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরকম কিছু না। সব অভিযানেই এ ধরনের হৈ চৈ করে।
এদিকে চসিকের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযান চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেটগণ প্রত্যক্ষ করেন শিশু একাডেমি এলাকা হয়ে আসা নালার কিছু অংশ সংকুচিত করে কল্লোল সুপার মার্কেটের সীমানার ভিতর দিয়ে চলে গেছে। মার্কেট সীমানায় নালা সংকুচিত হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলে প্রবর্তকসহ ওই এলাকায় জলজটের সৃষ্টি হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে এই সমস্যা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের নজরে আসে। প্রশাসক উক্ত স্থান একাধিকবার পরিদর্শন করে এই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজেন। তাই কল্লোল সুপার মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে জনস্বার্থে নালাটি প্রশস্ত করে পনিপ্রবাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে।