বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অনিশ্চয়তায় মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের বিকল্প আয়োজক খুঁজতে শুরু করেছে আইসিসি। এর মধ্যেই তারা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) প্রস্তাবও দিয়েছে। ভারত যদিও টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে রাজি হয়নি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বলছে, এমন কিছু জানা নেই তাদের। আগামী ৩ থেকে ২০ অক্টোবর বাংলাদেশে হওয়ার কথা নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। তবে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সরকার পতনের পর বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে আইসিসি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এরপর সরকার পতন ঘিরে দেখা দেওয়া নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে আইসিসি। সংস্থাটির এক মুখপাত্রের বরাতে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথাও বলা হয়।
সেই ধারাবাহিকতায়ই বিসিসিআইকে প্রস্তাব দিয়েছে আইসিসি। ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার মুম্বাই কার্যালয়ে গিয়ে এই কথা জানান বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। আইসিসিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। আইসিসি আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল, আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারব কি না। আমি স্পষ্টভাবে না করে দিয়েছি। আমাদের তখনও বর্ষাকাল থাকবে। এছাড়া আগামী বছর আমরা মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজন করব। তাই এমন কোনো বার্তা দিতে চাই না যে, পরপর দুই বছর আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চাই। মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে বিসিবিতেও চলছে নানান আলোচনা। এরই মধ্যে এই বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও বেশ কয়েকজন পরিচালক। বিশ্বকাপ আয়োজন ও এই সংক্রান্ত নানা কিছু নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বৃহস্পতিবার আবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে যান নিজাম উদ্দিন। মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী।
পরে ভারতকে বিশ্বকাপ আয়োজন করার প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, এই ধরনের কিছু তাদের জানা নেই। আইসিসি থেকে এটা নিয়ে আমাদেরকে কিছু জানানো হয়নি। অন্য কোনো দেশকে বিশ্বকাপ আয়োজন করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা নয় এখনই। হয়তো তারা বিভিন্ন সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। তবে আমরা কিছু জানি না। আমরা নিজেদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। আইসিসির সঙ্গেও আমাদের আলোচনা চলছে। আমরাও সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষা করছি। তবে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা অবশ্য মাথায় রেখেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। গত রোববার নতুন দায়িত্বে প্রথম দিন এই বিষয়ে আলোচনা করেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। পরে সংবাদমাধ্যমে আসিফ নিশ্চিত করেন, বিশ্বকাপ আয়োজনে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেবে তার মন্ত্রণালয়।