করোনাকালে ভয়াবহ রকমের অস্থির হয়ে উঠেছে বিশেষ ধরনের ওষুধের বাজার। দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে জ্বরসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত নাপা জাতীয় ওষুধ। কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাজারে ওষুধের দাম বেড়ে গেছে। সাপ্লাই না থাকার অজুহাতে দ্বিগুণ দামে ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। গত বেশ কয়েকদিন ধরে দ্বিগুণ দামে ওষুধ বিক্রি করা হলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনাকালে ভয়াবহ রকমের অস্থিরতা চলছে চারদিকে। এই সুযোগে ওষুধের দাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। করোনার সাধারণ উপসর্গ জ্বর এবং ব্যাথায় ব্যবহৃত হয় নাপা জাতীয় ওষুধ। প্যারাসিটামল গ্রুপের নাপা বাজারে দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে। টাকা দিয়েও বহু ওষুধের দোকানে নাপা জুটছে না। কোম্পানি ওষুধ সরবরাহ দিচ্ছে না বলে জানিয়ে একাধিক দোকানি জানান, ‘সরবরাহ নেই। আমরা বাড়তি টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে আনছি। দুয়েক টাকা লাভে বিক্রি করি।’
গতকাল চমেক হাসপাতালের সামনে বেশ কয়েকটি ওষুধের দোকান ঘুরে নাপা জাতীয় ওষুধ পাওয়া যায়নি। কয়েকটি দোকানে বেশ সতর্কতার সাথে বিক্রি করা হচ্ছে। নাপা এঙটেন্ড ১০টি ট্যাবলেটের দাম ছিল ১৫ টাকা। গত বেশ কয়েকদিন ধরে ১৫ টাকার ওই ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। নাপা-৫০০ ট্যাবলেট ১০টির এক পাতা বিক্রি হতো ৮ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। নাপা রেপিড ১০টি ট্যাবলেটের এক পাতা বিক্রি হতো ৮ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা। নাপা এঙট্রা ১২টি ট্যাবলেট বিক্রি হতো ৩০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। টাকা দিয়েও বহু দোকানে নাপা জুটছে না। নগরীর একাধিক দোকানে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, নাপার সরবরাহ নেই। তাই যার যেভাবে ইচ্ছে মূল্য বাড়াচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল জানান, নাপা জাতীয় ওষুধের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কথাটি আমরা শুনেছি। অচিরেই এই ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওষুধের বাজার নিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র বাজার নিয়ে কারসাজি করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নাপার প্রস্তুতকারক বেঙ্মিকো ফার্মার একজন কর্মকর্তা গতকাল জানান, কোম্পানি থেকে নাপা জাতীয় ওষুধের সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। কেন নাপার সরবরাহ কমলো তা আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানি না। তবে শুনেছি যে ওষুধের দাম বাড়ানো হবে। কাভার পাল্টানো হবে। তাই বাজার থেকে পুরাতন সব নাপা ফুরিয়ে গেলে নতুন দামে নতুন ওষুধ বাজারে ছাড়া হবে।