নাটকীয় ম্যাচে সিলেটের দ্বিতীয় জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

এবারের বিপিএলের শুরু থেকেই হেরেই চলেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। গত শুক্রবার আরেক হারতে থাকা দল ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে প্রথম জয় পেয়েছিল সিলেট। আর গতকাল দ্বিতীয় জয় তুলে নিল খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে। দারুন নাটকীয়তায় জমে উঠা ম্যাচটিতে সিলেট ৮ রানে হারিয়েছে খুলনাকে। অথচ সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল সিলেট। ১৫ বলে খুলার যখন প্রয়োজন ৪৫ রান তখন উইকেট বাকি তিনটি। কিন্তু টিটোয়েন্টি ম্যাচের রঙ বদলাতে যে সময় লাগে না তা ফুটে উঠল আবার। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও আবু হায়দার ম্যাচের চিত্র বদলে দিলেন চোখের পলকে। শেষ ওভারে যখন টানা দুটি চার মারলেন আবু হায়দার, খুলনার জয় তখন খুবই সম্ভব মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর চাপ সামলে শেষ তিন বল দারুণভাবে শেষ করলেন বোলার রুয়েল মিয়া। নীরব হয়ে পড়া গ্যালারিতে প্রাণ ফিরিয়ে জয়ের উল্লাসে মেতে উঠল সিলেট। বিপিএলে গতকাল রোববার খুলনা টাইগার্সকে দ্বিতীয় হারের স্বাদ দিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। শেষের শঙ্কা সরিয়ে ঘরের মাঠে জিতল তারা ৮ রানে। দু দলের খেলার মধ্যে দারুন একটা মিল ছিল। খুলনা যেভাবে ঝড় তুলেছিল শেষ দিকে তেমনি সিলেটও ১৮২ রানের সংগ্রহ করেছিল খেলার গতি বদল করেই। প্রথম সাত ওভারে তাদের রান ছিল মাত্র ৩০। এরপর রানের গতিতে দম লাগে একটু। তার পরও ইনিংসের মাঝমাঝি অবস্থা ছিল অনেকটা হাঁসফাঁস। কিন্তু পরের সময়টায় এমন উত্তাল হাওয়া বয়ে গেল মাঠময়, সেই তোড়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে স্কোরবোর্ডও। খুলনা শেষ পর্যন্ত আর নাগাল পায়নি সেই রানের।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট স্ট্রাইকার্স ১৫ রানে হারায় দুই বিদেশী রাকিম কর্নওয়েল এবং জর্জ মানসেকে। দু জন মিলে করেছেন ৬ রান। শুরু সে ধাক্কা সামাল দিতে বেশ ধীরে চলো নীতি গ্রহন করেন রনি তালুকদার এবং জাকির হাসান। সময় যতই গড়িয়েছে ততই মারমুখি হয়ে উঠেছেন দুজন। ৬১ বলে ১০৬ রানের দারুন জুটি গড়েন দুজন। ৪৪ বলে ৫৬ রান করা রমি তালুকদারকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন আবু হায়দার রনি। অ্যারন জোন্সকে নিয়ে আরো ২৯ রান যোগ করেন জাকির হাসান। মাত্র ৬ বলে ৩টি ছক্কায় ২০ রান করে ফিরেন জোন্স। তবে জাকির হাসানকে ফেরাতে পারেনি খুলনার বোলাররা। ৪৬ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন জাকির হাসান। তিনি ৩ টি চারের পাশাপাশি ৬টি ছক্কা মেরেছেন। রনিজাকিরের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ১৮২ রান সংগ্রহ করে সিলেট স্ট্রাইকার্স। খুলনা টাইগার্সের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেণ আবু হায়দার রনি এবং জিয়াউর রহমান। ১৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭ রানের মাথায় মোহাম্মদ নাঈমকে হারায় খুলনা। এরপর ইমরুল কায়েসও ফিরেন ২ রান করে। ডওরিস রসুলি এবং মেহেদী হাসান মিরাজ কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেনি। দুজনই ফিরেছেন ১৫ রান করে। ইনিংসের সুচনা করতে নামা বসিস্টো অপর প্রান্তে আসা যাওয়া দেখতে দেখতে একসময় নিজেই রণে ভঙ্গ দেন। ৪০ বলে ৪৩ রান করে আসেন এই ওপেনার। মোহাম্মদ নেওয়াজ এবং মাহিদুল ইসলাম অংকন ১৭ বলে ৩২ রানের দারুন এক জুটি গড়ে খুলনাকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। ১৮ বলে ৩৩ রান করে নেওয়াজ ফিরলে আবার চাপে পড়ে খুলনা। সে চাপ আরো কঠিন হয়ে যায় যখন জিয়াউর রহমান ফিরেন মাত্র ৪ রান করে। তবে আবু হায়দার এবং মাহিদুল ইসলাম মিলে আবারো খুলনাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেননা। ২০ তম ওভারের চতুর্ত এবং পঞ্চম বলে দুজন ফিরলেন ৮ রানে হার মেনে নিতে হয় মিরাজের দলকে। মাহিদুল ১৬ বলে করেন ২৮ রান। আর আবু হায়দার রনি করেন ৬ বলে ১৪ রান। খুলনা থামে ১৭৪ রানে। সিলেটের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব এবং রুয়েল মিয়া। সিলেটের জয়ের নায়ক জাকির হাসান ৪৬ বলে ৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি পান তিনি টানা দ্বিতীয় ম্যাচে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবকে দলে নিতে চায়নি নির্বাচকরা
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার দিনে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি লিটনের