ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ শেষে নতুন বছরে নতুন পথচলা শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। গত বৃহস্পতিবার জিমএটি ২৩:০০ থেকে যুক্তরাজ্য ইইউর নিয়ম অনুসরণ বন্ধ করে দেয়।
তার জায়গায় কার্যকর হয় নতুন চুক্তি। এখন থেকে নতুন চুক্তি অনুযায়ী ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এখন যুক্তরাজ্যের স্বাধীনতা আমাদের হাতে।
দীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং আমরা আমাদের কাজ ভিন্নভাবে এবং আরো ভালোভাবে করতে পারবো। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, যুক্তরাজ্য এখনো ‘বন্ধু এবং মিত্রই’ থাকবে। যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা অবশ্য আগামী কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ নতুন নিয়ম নিয়ে কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। খবর বিডিনিউজের।
২০১৬ সালে ঐতিহাসিক গণভোটে ব্রেঙিটের পক্ষে রায় আসার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় যুক্তরাজ্য। কিন্তু উভয়পক্ষ একটি বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হতে না পারায় গত ১১ মাস ধরে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ আটকে ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তারা ভবিষ্যত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং বাণিজ্য নিয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে সক্ষম হয়েছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর ইইউর ২৭টি সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতরা ইইউ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেন। পরে ইইউর শীর্ষ কর্মকর্তারা চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সই করেন।
তারপর গত বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ৫২১-৭৩ ভোটে দ্রুতই চুক্তিটি অনুমোদন পায়। সেখান থেকে উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডস এ চুক্তি চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর রানিও তাতে সম্মতি দেন এবং সেটি আইনে পরিণত হয়। নতুন চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত পণ্য শুল্ক-মুক্তভাবে ইইউর অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রবেশ করার সুযোগ পাবে। তার অর্থ যুক্তরাজ্য এবং ইইউর মধ্যে পণ্য আমদানিতে কোনো কর দিতে হবে না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আগের মত ব্যবসা প্রয়োজনে বা ইইউর দেশগুলো ভ্রমণে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের কাগজপত্র লাগবে না। বরং এখন থেকে তাদের আরো বেশকিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে। ব্যাংকিং এবং অন্যান্য সেবাখাত কোন নিয়মে চলবে তা নিয়ে এখনো অনিশ্চিয়তা কাটেনি।
যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এই দুই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।