ইংল্যান্ড এবং স্পেন দু’দলই একবার করে পুরুষ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। ইংলিশরা জিতেছে ১৯৬৬ সালে আর স্পেনিশরা ২০১০ সালে। বর্তমান বিশ্বে ফুটবলের প্রাণকেন্দ্র বলতে বুঝায় ইংল্যান্ড আর স্পেনকে। কিন্তু নারী ফুটবলের গত আট আসরের একবারও ফাইনালে যেতে পারেনি ইংল্যান্ড এবং স্পেন।
অবশেষে ফাইনালে দু’দল। আর স্বপ্নের সে ফাইনালে শেষ হাসিটা স্পেনের। ইংলিশদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে স্পেনিশ নারীরা জিতে নিল বিশ্বকাপ। ফলে জাভি, ক্যাসিয়াস, ইনিয়েস্তাদের পাশে নিজেদের শামিল করল কোল, পারিদেস, কোডিনারা, ওলগা কারমানারা। এই দুই দল প্রথমবারের মত ফাইনালে খেলায় নারী ফুটবল পেল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি স্টেডিয়ামে প্রায় ৭৬ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ইংল্যান্ডকে ১–০ গোলে হারিয়ে স্বপ্ন পুরণের উচ্ছাসে মাতে স্পেনিশ নারীরা। এই ম্যাচে ইংল্যান্ডকেই ফেবারিট ধরেছিল ফুটবল বোদ্ধারা। কারণ স্পেন যে দলটি নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিল সে দলে ছিল না সিনিয়র অনেক সদস্য। কোচের সাথে বিদ্রোহ করে তারা দল থেকে সরে দাঁড়ায়। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে অপেক্ষাকৃত নতুনদের নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিল স্পেনিশ কোচ। কিন্তু তার দক্ষ পরিচালনায় সব ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে বিশ্বকাপ জিতে নিল স্পেন। স্পেনিশ ফুটবলের বিশ্ব বিখ্যাত সংস্করণ টিকিটাকা। সে টিকিটাকা ফুটবলের কাছে হার মানল ইংলিশদের লম্বা পাসের ফুটবল।
এবারের আগে দুবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে কখনও নকআউট পর্বের ম্যাচ জয়ের অভিজ্ঞতা ছিল না স্পেনের। ওই দুই আসর মিলিয়ে সাত ম্যাচে তাদের জয়ই ছিল মাত্র একটি। গতবার শেষ ষোলোয় খেলা ছিল তাদের সেরা সাফল্য। সেই দলই এবার সাত ম্যাচের ছয়টি জিতে অবিশ্বাস্যভাবে মাথায় পরল বিশ্ব জয়ের মুকুট। ইংল্যান্ডের আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরও। ১৯৬৬ সালে পুরুষদের বিশ্বকাপ জয়ের পর এবারই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ডের কোনো দল। গত বছর ইউরো জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়েও বিশ্ব মঞ্চে পেরে উঠল না ইংলিশ মেয়েরা।
শিরোপা লড়াইয়ে খেলার স্পেন এগিয়ে যায় ২৯ মিনিটে। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি স্প্যানিশরা। যদিও ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ইংল্যান্ড চাপ সৃষ্টি করেছিল স্পেনিশ শিবিরে। কিন্তু গোলের দেখা পায়নি। ফলে স্বপ্ন ভঙ্গের হতাশা নিয়ে ফিরতে হলো ইংলিশদের। আর শিরোপার প্রথম স্বাদ নেয় স্পেন। টুর্নামেন্টে সর্বাধিক চারবারের চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র। দুইবার জিতেছে জার্মানি। একবার করে জিতেছে জাপান ও নরওয়ে। এদের পর পঞ্চম দল হিসেবে মেয়েদের বিশ্বকাপ জিতল স্পেন। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন স্পেনের মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি। সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছেন ইংল্যান্ডের ম্যারি এরাপ্স।