নতুন ঘরে নতুন বউ নয়, এলো দুই পুত্রের কফিন

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বিধবা সেলিনা আকতারের আশা ছিল বড় ছেলেকে বিয়ে করাবেন। নতুন ঘরে তুলবেন নতুন বউ। তাই বছর খানেক আগে থেকে শুরু করেন নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজ। কিন্তু ওমান থেকে সেই ঘরে এলো মেজ ছেলে মুহাম্মদ আব্বাস হোসেন (২৫) ও সেজ ছেলে মুহাম্মদ আজাদ হোসেনের (২০) কফিনে মোড়ানো লাশ। তা দেখে বারবার মূর্চা যাচ্ছিলেন মা। স্বজনদের মধ্যেও পড়ে কান্নার রোল। দুই ভাইয়ের কফিন সামনে নিয়ে মায়ের পাশে বসে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েছিল বড় ভাই আকতার হোসেন (২৮), ছোট ভাই আয়মন হোসেন (১৩) ও আয়াজ হোসেন ()

গতকাল বৃহস্পতিবার এমন দৃশ্য দেখা গেছে নাজিরহাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরগাঁও পাড়া এলাকায়। বিলাপ করে কাঁদতে কাঁদতে সেলিনা বলছিলেন অনেক কথা। বড় ছেলে আকতার হোসেনকে বিয়ে করাবেন বলে এক বছর আগে খুব শখ করে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন তারা স্বামীস্ত্রী। কিন্তু ছয়মাস আগে হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান স্বামী আহমদ হোসেন। এরপর থেকে পাঁচ ছেলেকে নিয়ে তার রেখে যাওয়া অসম্পূর্ণ কাজ করে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে ওমানে সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে মারা গেল দুই ছেলেও।

কান্নারত সেলিনা জানান, ওমানে রেখে আসা দুই ছেলের সঙ্গে রোববার সর্বশেষ কথা হয় তার। তারা মা এবং দেশে থাকা তিন ভাইয়ের খবর নেয়। ওমানে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট করছে কিনা জানতে চায়। তারা বারবার বলছিল, মা তোমাকে ছাড়া ভালো লাগছে না, ভাইদের নিয়ে তাড়াতাড়ি চলে এসো। জবাবে তিনি জানান, বড় ভাইয়ার বউ ঠিক করেই তবে ফিরবেন ওমান।

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ওমান শহরে বন্ধুদের সঙ্গে ওমানের সমুদ্র সৈকতের আল শিফা নামক এলাকায় ঘুরতে যায় দুই ভাই আব্বাস ও আজাদ। সেখানে সাগরে গোসল করতে নেমে তারা স্রোতের টানে তলিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে সাগর থেকে দুই ভাইয়ের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে। মরদেহ দেশে আসার পর গতকাল বিকেল ৫টায় নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দুই ভাইয়ের লাশ দাফন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাজানো হচ্ছে বস্তাবন্দী বই
পরবর্তী নিবন্ধঢাকা-মস্কো বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত