নতুন কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ। এ সময় সংস্কার করা পুরনো কালুরঘাট সেতু চালু করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যানবাহন চলাচল শুরুর অনুমতি দেয়ারও তাগিদ দেন তিনি। গতকাল দুপরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নাজমুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান তিনি। পরে তিনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর চৌধুরীর সাথেও সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে উভয় কর্মকর্তার সঙ্গে চট্টগ্রামবাসীর জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে কল্যাণমুখী ও যাত্রীবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কালুরঘাট সেতু। এ সেতুর জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষকে বিশেষ করে বোয়ালখালীর জনসাধারণকে গত ৩০–৩৫ বছর ধরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে এবং বোয়ালখালীর মানুষ বারবার দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার সেটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। তার পরিবর্তে গালভরা বড় বড় উন্নয়নের বুলি দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প বানিয়ে লুটপাট করেছে।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের যে প্রকল্প রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে, সেটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আমরা জানতে পেরেছি, নতুন প্রকল্পে ব্যয় আগের চেয়ে আট–দশগুণেরও বেশি বেড়েছে। ব্যয় বাড়িয়ে মাফিয়া সরকার লুটপাটের কোনো ফন্দি এঁটেছিল কি না, সেটা খতিয়ে দেখে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে একনেকে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই, নতুন সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হোক, লাখো জনসাধারণকে তাদের নিত্যকার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়া হোক। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই কালক্ষেপণ করা উচিৎ হবে না।
তিনি বলেন, পুরনো যে সেতু আছে, সেটি সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু কি কারণে সেটি চালু করে যানবাহন চলাচলে অনুমতি দেয়া হচ্ছে না, সেটি আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। মাসের পর মাস ধরে ফেরি দিয়ে নদী পার হতে গিয়ে মানুষের যে দুর্ভোগ, সেটি এভাবে চলতে দেয়া সমীচীন নয়। আমাদের দাবি হচ্ছে, সংস্কার করা সেতুটি দ্রুত চালু করা হোক। সাক্ষাতে এরশাদ উল্লাহ চট্টগ্রাম–কঙবাজার রুটের ট্রেন গোমদন্ডী স্টেশনে যাত্রী উঠা–নামার জন্য বিরতির ব্যবস্থা করা এবং গোমদন্ডী স্টেশনকে নতুনভাবে সংস্কার করার জন্য অনুরোধ করেন। রেলওয়ের দুই কর্মকর্তা বিএনপি নেতার এসব দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।
রেলের জিএম নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরাও মনে করি নতুন রেল সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। রেল সচিব এসে কিছুদিন আগে পরিদর্শন করে গেছেন। নতুন রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আজিজুল হক চেয়ারম্যান, শওকত আলম, বিএনপি নেতা জাফর আহম্মদ, আবুল হাশেম, জাকির হোসেন, নুরুল হক নুরু, মো. বাদশাহ, সরোয়ার আলমগীর, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম শাহীন, আকতার হোসেন, এম এন করিম, রফিকুল ইসলাম, মহিউদ্দিন জনি, মো. লোকমান, এস এম সোহেল মিয়াজি, রোকন উদ্দিন ও মো. মিজান।