আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এর আওতায় দেশটিতে ফ্রান্সের অতীত ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। তারা জাতীয় পতাকার রঙের স্কার্ফ জড়িয়ে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আলজেরিয়া দীর্ঘজীবী হোক স্লোগান দিয়ে আইনটি অনুমোদন করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়েছেন আইনপ্রণেতারা। ইতিহাসকে আড়াল করার চেষ্টা রুখতেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ। নতুন আইনে আলজেরিয়ার ঔপনিবেশিক অতীত এবং এর ফলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডির জন্য ফ্রান্সকে আইনিভাবে দায়ী করা হয়েছে। ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতাকে রাষ্ট্রীয় আইনি কাঠামোর কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে এই আইন প্রয়োগযোগ্য না হলেও এর উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। ঔপনিবেশিক স্মৃতি নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে আলজেরিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ এক বড় ফাটলেরই লক্ষণ। পার্লামেন্ট স্পিকার ইব্রাহিম বুগালি বলেছেন, এই আইন দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, আলজেরিয়ার জাতীয় স্মৃতি মুছে ফেলার মতো নয় এবং এ নিয়ে কোনও আলোচনাও হবে না। আইনের টেক্সটে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের নানা অপরাধের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে আছে পারমাণবিক পরীক্ষা, বিনাবিচারে হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ধারাবাহিকভাবে সম্পদ লুণ্ঠন। এতে আরও বলা হয়েছে, ফরাসি উপনিবেশের কারণে সৃষ্ট সব বস্তুগত ও নৈতিক ক্ষতির জন্য পূর্ণ ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়া আলজেরীয় রাষ্ট্র ও জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার। ফ্রান্স ১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে আলজেরিয়া শাসন করেছে। নির্যাতন, গুম, হত্যাযজ্ঞ, অর্থনৈতিক শোষণ এবং আদিবাসী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে গণহারে বিতাড়ন এবং প্রান্তিক করে রাখার মধ্য দিয়ে চলেছে সেই শাসনব্যবস্থা। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। সেই যুদ্ধে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে দাবি আলজেরিয়ার।












