নগরের ৪৭২ সড়কের উন্নয়নে পরিকল্পনা তুলে ধরলেন মেয়র

চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাবাজদের জায়গা নেই

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

নগরের ৪৭২টি সড়কের উন্নয়নে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ৪৭২টি রাস্তার মধ্যে কিছু রাস্তার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, কিছু চলমান রয়েছে এবং কিছু রাস্তার উন্নয়ন শিগগিরই শুরু হবে। তিনি গতকাল শুক্রবার সকালে রসুলবাগ আবাসিক থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোড সংযোগ সড়ক নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনকালে এসব কথা বলেন। ২০০০ ফুট মূল সড়ক এবং প্রায় ২০০ ফুট বহিলেইনের এ সড়ক নির্মাণ করতে ব্যয় হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা। মূল প্যাকেজের মধ্যে রসুলবাগ থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোড এবং সৈয়দ শাহ রোড হেলথ কেয়ার আবাসিক এলাকা নির্মিত হবে। কোভিড ১৯ রিকভারি প্রকল্পের আওতায় এ সড়কের অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক।

মেয়র ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাস্তার মানের সাথে কোনো আপস করা হবে না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি রাস্তা টেকসই হতে হবে। কাজের মান খারাপ হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, ঠিকাদারদের কোনো ধরনের ঘুষ বা কমিশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে এবং রাস্তা নির্মাণে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে হবে। এসময় তিনি জনগণের উন্নয়ন ও স্বচ্ছতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন কাজ চলবে, দুর্নীতির কোনো স্থান নেই।

চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাবাজদের কোনো জায়গা নেই। যারা চাঁদাবাজি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং আইনশৃক্সখলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, যারা শহরে চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং জনগণ যদি এসব অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারে, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্ষাকাল আসন্ন হওয়ায় শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র বলেন, সিডিএর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সাময়িক কিছু অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমরা মনিটরিং করছি, যাতে পানি জমে না থাকে এবং দ্রুত নিষ্কাশন হয়। তিনি জনগণকে রাস্তার ড্রেনের মধ্যে প্লাস্টিক ও বর্জ্য না ফেলতে অনুরোধ করেন এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য সকল নাগরিককে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

মেয়র মশার উৎপাত নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন সকাল ও রাত দুইবার মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিনি সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, যদি কেউ দায়িত্বে অবহেলা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মেয়র কঠোর নজরদারির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতে রমজানে পণ্যদ্রব্যের মূল্য কমানো হয়, অথচ বাংলাদেশে উল্টো দাম বাড়ানো হয়। ব্যবসায়ীদের উচিত জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করা। তিনি বাজার মনিটরিং জোরদার করার ঘোষণা দেন এবং জনগণকে অনুরোধ করে বলেন, যদি কেউ অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করে, তাহলে আমাদের জানান। আমরা ব্যবস্থা নেব। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম আশফাক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ, দুর্ভোগ শ্রমিক সংগঠনের নির্বাচনে দ্বন্দ্ব