নগরে নকল জর্দা তৈরির কারখানা

সাত ট্রাক পণ্য, উপকরণ ও মেশিনারি জব্দ ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২১ অক্টোবর, ২০২০ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর চকবাজার থানাধীন চন্দনপুরা মাজার গলিতে নকল জর্দা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রাম টিম। গত সোমবার সংস্থাটির উপকমিশনার শাহীনুর কবির পাভেলের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে ওই কারখানা থেকে সাত ট্রাক নকল জর্দা, জর্দা তৈরির উপকরণ ও মেশিনারি জব্দ করা হয়। এর মধ্যে ছিল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ও অবৈধ প্রায় ১২ হাজার ১০টি কৌটা, ৩ হাজার ৮৪০ প্যাকেট জর্দা, ৭২ বস্তা জর্দা তৈরির উপকরণ, ৪৬ বস্তা খালি কৌটা, দুটি জর্দা কৌটাজাত করার মেশিন, একটি প্যাকেজিং মেশিন এবং জর্দা তৈরি ও মোড়কজাত করার বিভিন্ন উপকরণ।
প্রাথমিক মূল্যায়নে প্রতিষ্ঠানটি ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে। মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনার করার দায়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ভ্যাট কর্মকর্তারা।
অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল বিকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রাম কার্যালয়। সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট কমিশনার মো. এনামুল হক বলেন, এ ঘটনায় আমরা বাড়ির মালিকের মাধ্যমে মূল হোতাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে, সেই জায়গার রাস্তাটা অত্যন্ত সরু। সেখানে কোনো যানবাহন যায় না। হেঁটে গিয়ে ওই কারখানায় পৌঁছাতে হয়েছে। ঘটনার পর আমরা বাড়ির মালিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি গা ঢাকা দেওয়ায় তার সাথে কথা বলতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, একটি রুমে কিছু মেশিনারি বসিয়ে নকল জর্দা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমাদের টিম ৭টি সেমিপাকা রুম দেখতে পায়। এসব রুমের মধ্যে কোনোটাতে জর্দার কৌটা, কোনোটাতে জর্দার উপকরণ, কোনোটাতে তামাক ও কোনোটাতে মেশিনারি রাখা ছিল। তবে এটাকে কারখানা বলা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য গত বছরের পহেলা জুলাই থেকে আমরা কাজ করছি। যেখানে খবর পাচ্ছি সেখানে হানা দিচ্ছি। মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট থেকেও এ রকম জর্দা জব্দ করে নিয়ে আসি। সেই সময় মামলাও করেছি। আসলে জর্দার তৈরিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কোনো মেশিনারি সেটআপের দরকার হয় না। কেমিক্যাল মিশিয়ে সাদা পাতার সাথে এগুলো তৈরি হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। যারা ভোক্তা তারা না জেনে খেয়ে থাকে। এই ধরনের অস্বাস্থ্যর পণ্য খেয়ে ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, উপকমিশনার শাহীনুর কবির পাভেল, কোতোয়ালী সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল দুলু, সদরঘাট সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা শাহীন আকতার এবং প্রিভেনটিভ সদরের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন সাজে নতুন বগিতে সুবর্ণ
পরবর্তী নিবন্ধচার্জশিটে একমাত্র আসামিকে বাদ দিয়ে অন্যজনের নাম