নগরে টিকায় টান

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

করোনার টিকায় টান পড়েছে চট্টগ্রাম মহানগরে। প্রথম দফায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (্‌চসিক) এলাকায় দেড় লাখ (১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫) ডোজ টিকা বরাদ্দ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরমধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১ লাখ ১২ হাজার ১০৮ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। হিসেবে অবশিষ্ট ৪২ হাজার ৭৯৭ ডোজ টিকা বর্তমানে অব্যবহৃত রয়েছে। করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দৈনিক ১০ হাজারের কিছু কম-বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে। সে হিসেবে অবশিষ্ট ৪২ হাজার ডোজ নিয়ে সর্বোচ্চ ৪ থেকে ৫ দিন এ টিকাদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব। আর বরাদ্দ পাওয়া টিকা শেষ হলে নতুন বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হতে পারে।
এদিকে বরাদ্দ পাওয়া দেড় লাখ ডোজ টিকার বিপরীতে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত মহানগরের প্রায় ২ লাখ (১ লাখ ৯৩ হাজার ৬২৫ জন) মানুষ টিকা নিতে অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। অর্থাৎ মহানগরে প্রাপ্ত বরাদ্দের চেয়ে এরইমধ্যে প্রায় অর্ধ লাখ বেশি মানুষ টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন। এর প্রেক্ষিতে আরো ১ লাখ ডোজ টিকা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে গত সোমবার পাওয়া ২০ লাখ ডোজ টিকার মধ্য থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এলাকার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ১ লাখ ডোজ টিকার চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী।
এসএমএস ছাড়া টিকা নয় : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এখন কেবল অনলাইনে নিবন্ধিত কেন্দ্রেই টিকা নিতে হবে নিবন্ধনধারীকে। এ বিষয়ে চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, যিনি যে কেন্দ্রের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন, এখন থেকে তিনি সে কেন্দ্রেই টিকা নেবেন। ভিন্ন কোনো কেন্দ্রে টিকা নেয়া যাবে না। আর নিবন্ধনের পর টিকাগ্রহণের তারিখ ও সময়সহ সংশ্ল্লিষ্ট নিবন্ধনকারী তার মোবাইলে একটি এসএমএস পাবেন। ওই এসএমএসে উল্ল্লেখিত তারিখে নিবন্ধনকারী টিকা নিতে কেন্দ্রে যাবেন। কেন্দ্রে গিয়ে মোবাইলে আসা এসএমএস দেখিয়ে তিনি টিকা নিতে পারবেন। এসএমএস না আসা পর্যন্ত টিকা নিতে পারবেন না। এসএমএস পাওয়া সাপেক্ষে সকলকে নিবন্ধিত স্ব-স্ব কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন এ দুই কর্মকর্তা।
উপজেলায় পর্যাপ্ত টিকা মজুদ : মহানগর এলাকায় টান পড়লেও উপজেলা পর্যায়ে এখনো পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকা মজুদ রয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। উপজেলা পর্যায়ে এখনো প্রায় ২ লাখ ডোজ টিকা মজুদ থাকার তথ্য জানান তিনি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় মোট ৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ টিকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। এর মধ্যে মহানগরে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫ ডোজ। আর অবশিষ্ট ৩ লাখ ১ হাজার ৯৫ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেয়া হয় জেলার ১৪ উপজেলায়। উপজেলা পর্যায়ে প্রাপ্ত বরাদ্দের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ১৬২ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। হিসেবে আরো ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৩৩ ডোজ টিকা উপজেলা পর্যায়ে এখনো অবশিষ্ট রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে বলেন- উপজেলা পর্যায়ে অবশিষ্ট থাকা টিকাগুলো মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করার টার্গেট রয়েছে আমাদের। সেভাবেই আমরা কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি। আর প্রথম দিকে কম সংখ্যায় টিকা নিলেও এখন উপজেলা পর্যায়েও টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। অর্থাৎ গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝেও টিকা গ্রহণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে। তারা টিকা নিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এটি ভালো দিক বলেও মন্তব্য করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার পর্যন্ত মহানগর ও উপজেলা মিলিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় মোট ২ লাখ ২৭ হাজার ২৭০ জন মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন। যা টিকা গ্রহণে আগ্রহী মোট নিবন্ধনকারীর ৬৪ ভাগ প্রায়। গতকাল দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামের মোট ৩ লাখ ৫৭ হাজার ১১৪ জন অনলাইনে টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিলখানা ট্রাজেডির একযুগ আজ
পরবর্তী নিবন্ধলামায় বন্যহাতির আক্রমণে বাক প্রতিবন্ধী যুবতীর মৃত্যু