নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডে নতুন ওএমএস ডিলার নিয়োগ খাদ্য অধিদপ্তরের

বাকী ৮ ওয়ার্ডে একাধিক আবেদনকারী থাকায় হবে লটারি দোকান তদন্তে অনিয়মের অভিযোগ ১ জুলাই থেকে নতুন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসের পণ্য বিক্রয়

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৭ জুন, ২০২৫ at ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

খাদ্য অধিদপ্তরের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী আগামী ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে নতুন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) এর পণ্য বিক্রি শুরু হবে। এই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর ৪২৮ জন আবেদনকারীর মধ্য থেকে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩ ওয়ার্ডে নতুন ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) ডিলার নিয়োগ দিয়েছে। বাকী ৮টি ওয়ার্ডে একাধিক যোগ্য আবেদনকারী থাকায় লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে। এদিকে নগরীর ১২টি ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন থেকে ওএমএস’এর ডিলার ছিল না। এই ১২টি ওয়ার্ডে কিছুদিন আগে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই ১২টি ওয়ার্ড হলো৩ নম্বর, ৬ নম্বর, ৮ নম্বর, ১৫ নম্বর, ১৭ নম্বর, ২১ নম্বর, ২৪ নম্বর, ২৫ নম্বর, ২৭ নম্বর, ৩১ নম্বর, ৩২ নম্বর, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড।

অপরদিকে নগরীর ৮টি ওয়ার্ডে (৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ড, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী, ৩৭ নম্বরউত্তন মধ্য হালিশহর, ৩৮ নম্বরদক্ষিণ মধ্য হালিশহর, ৩৯ নম্বরদক্ষিণ হালিশহর ও ৪০ নম্বরউত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ড) একাধিক যোগ্য আবেদনকারী থাকায়এই ৮ ওয়ার্ডে লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী। এসব ওয়ার্ডে যাচাইবাছাই করে ডিলারশিপের জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান গুলোকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল ওএমএস কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগরীর ওয়ার্ড ভিত্তিক ওএমএস ডিলার নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী আজাদীকে জানান, ওএমএস কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগরীর ওএমএস’এর নতুন ডিলার আমরা আজকে (গতকাল বৃহস্পতিবার) নিয়োগ দিয়েছি। আগামী ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে নতুন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস’এর পণ্য বিক্রি শুরু হবে। তিনি বলেন, আজকে (গতকাল) নগরীর ২৯ ওয়ার্ডের মধ্যে ২১ ওয়ার্ডে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৮টি ওয়ার্ডে একাধিক যোগ্য আবেদনকারী থাকায়এই আটটি ওয়ার্ডে লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে। নগরীর যে ১২টি ওয়ার্ডে আগে ওএমএস’এর ডিলার ছিল না সেখানে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নগরীর ওয়ার্ড ভিত্তিক নতুন নিয়োগ ডিলারদের প্রতিষ্ঠান গুলো হলো১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জন্য এস এম এন্টারপ্রাইজ (ডিলার শাহানাজ সুলতানা), ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের মেসার্স ফিরোজ ট্রেডিং (ডিলার মো. ফিরোজ উদ্দিন), ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের জন্য এম কে সপ (ডিলার আহাদ উদ্দিন মো. সাজ্জাদ), ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের জন্য মাওলা এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. সাইফুল ইসলাম), ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স রুমাইসা এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. মিনহাজুল আলম), ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের জন্য হৃদয় স্টোর (ডিলার রবিউল হোসেন), ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স তুরাম স্টোর (ডিলার মো. আরাফাত আকবর চৌধুরী), ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স সামির এন্টারপ্রাইজ (ডিলার সামির ইবনে জাকের), ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের জন্য বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ (ডিলার সাদিয়া আক্তার), ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের জন্য বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী), ১৮ নম্বর পূর্বা বাকলিয়ার জন্য মেসার্স নূর ইসলাম স্টোর (ডিলার মো. নূর ইসলাম রুবেল), ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের মেসার্স সানি এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. শাহীন), ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স এম এ সবুর এন্ড ব্রাদার্স (ডিলার মো. আবদুস সবুর), ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের জন্য মা এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. শাহাদাৎ), ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের জন্য শফি এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. শফি), ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের জন্য কাজল স্টোর ও মিছমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের মধ্যে লাটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে। ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের জন্য সরকার ট্রেডিং, মেসার্স সাবরাজ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নুর ট্রেডার্স এবং আর টিএ টাইম এজেন্সীর মধ্যে লাটারীর মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে। ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের জন্য নেওয়াজ স্টোর (ডিলার মো. ওমর ফারুক), ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের মো. আফিফা স্টোর (ডিলার সাইফুল আজম), ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স জাহেদ এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. জাহেদ আহমদ), ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের জন্য মের্সাস রাজন এন্টারপ্রাইজ (ডিলার সুভাষ চন্দ্র দাশ), ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ডের জন্য মেসার্স ভাই ভাই রাইচ এজেন্সি (ডিলার আবদুস সাত্তার), ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের রিহাব এন্টারপ্রাইজ (ডিলার মো. রিয়াদ উল হক), ৩৭ নম্বরউত্তর মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডে মেসার্স মোবারক স্টোর ও মেসার্স কাজল স্টোরের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে। ৩৮ নম্বরদক্ষিণ মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডে মের্সাস আনজুমান স্টোর ও মের্সাস হাফেজ মুনির উদ্দিন এর মধ্যে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে। ৩৯ নম্বরদক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে জানে আলম এন্টারপ্রাইজ ও মের্সাস ইলিয়াস স্টোরের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে। ৪০ নম্বরউত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে শাহানুর এন্টারপ্রাইজ, আইনান স্টোর ও পতেঙ্গা ট্রেডার্স এর মধ্যে লাটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে।

এদিকে ওএমএস ডিলার নিয়োগে দোকান তদন্ত (ইন্সপেক্টরদের) পক্ষপাতিত্ব ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের আবেদনকারী। ১১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক নাইম উদ্দীন আজাদীকে বলেন, আমার ওয়ার্ডে বিক্রয়কেন্দ্র সাগরিকা বিটেক বাজারের পয়েন্টে আমার দোকান ছাড়া অন্যকোন দোকান ছিল না। কিন্তু পরে খবর পেলাম আমার পাশে রাতারাতি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা তাদের পক্ষে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এখানে তদন্তে অনেক অনিয়ম হয়েছে। আমি এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেমন মাতৃসদন হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধআ. লীগ আমলের ৩ সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে কমিটি