বিয়ে, জন্মদিন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বা অন্য যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য দেশের যেকোনো সিটি করপোরেশনে কমিউনিটি সেন্টার বা মিলনায়তন ভাড়া করার আগে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক করদাতা উভয়ের জন্য এমন বিধান রেখে গতকাল শনিবার অর্থ বিল পাস হয়েছে।
একই সঙ্গে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মোটেল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নেওয়ার সময় ও লাইসেন্স নবায়নের সময়ও আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
বর্তমানে আরও ৪৩ ধরনের সরকারি–বেসরকারি সেবা গ্রহণে এ বিধান বাধ্যতামূলক রয়েছে। গতকাল প্রস্তাবিত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বিলে এ সংক্রান্ত বিধানে সংশোধন আনার প্রস্তাব এলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তা গ্রহণ করেন। পরে সংসদে তা অনুমোদন হয়।
এর আগে বাজেট প্রস্তাবের সময় অর্থমন্ত্রী দেশের সব স্থানের কমিউনিটি সেন্টারের ভাড়ার ক্ষেত্রে বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করার বিধান রেখেছিলেন। অর্থ আইনে শুধু সিটি করপোরেশনের ভেতরে কমিউনিটি সেন্টারের জন্য এ বিধান রেখেছে।
রিটার্ন বাধ্যতামূলক যেসব সেবায় : সরকার বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন জমা দেওয়া প্রথমবার বাধ্যতামূলক করে ২০২২–২৩ অর্থবছরে। তখন ৩৮টি সরকারি–বেসরকারি সেবা গ্রহণকালে তা বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর এর আওতা আরও বাড়িয়ে ৪৩টি সেবা করা হয় ২০২৩–২৪ অর্থবছরে। এসব সেবার অন্যতম হল– ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ আবেদন; ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা; কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে; ব্যবসায় সমিতির সদস্য হলে; ক্রেডিট কার্ড নেওয়া; কারও সন্তান বা পোষ্য ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করলে; অস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া; উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে; চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদের ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন; সিটি করপোরেশন এলাকায় গ্যাস–বিদ্যুৎসহ সরকারি পরিষেবার সংযোগ নিতে হলে; ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত থাকলে; নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়িভাড়া বা লিজ গ্রহণের সময় বাড়ির মালিকের; সরকারি কর্মচারীরা ১৬ হাজার টাকার বেশি মূল বেতন পেলে; নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সেবা বা পণ্য গ্রহণকালে ওই পণ্য বা সেবা সরবরাহকারীর; ট্রাস্ট, তহবিল, ফাউন্ডেশন, এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী সংস্থা, সোসাইটি ও সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাব খুলতে ও চালু রাখতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারে ভেন্ডার বা দলিল লেখক হিসেবে নিবন্ধন, লাইসেন্স বা তালিকাভুক্তি করতে বা বহাল রাখতে; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কঙবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে এমন গঠিত কর্তৃপক্ষ বা অন্য সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় অনুমোদনের জন্য ভবন নকশার আবেদন দাখিলকালে।