ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘প্ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব চট্টগ্রাম সিটি টুওয়ার্ডস এ স্মার্ট সিটি’ শীর্ষক এক সেমিনার গত শনিবার কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে চসিক মেয়র মো রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথি ও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বিশেষ অতিথি ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএসটিসির উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেনের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম শহিদুল আলমের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের ভাইস- চেয়ারম্যান (একা. এন্ড এইচআরডি) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কেন্দ্রের ভাইস-চেয়ারম্যান (এডমিন. প্রফেশ. এন্ড এসডব্লিউ) প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু। মূল প্রবন্ধকারের পরিচিতি তুলে ধরেন কারিগরী আলোচনা ও সেমিনার উপ-কমিটির সদস্য-সচিব ড. প্রকৌশলী এএসএম সায়েম।
প্রধান অতিথি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ সারা দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জোরদার হয়েছে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছেছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় জনগণ এর থেকে কাঙ্ক্ষিত সুবিধাসমূহ পরিপূর্ণভাবে প্রাপ্ত হচ্ছেন না। মেয়র বলেন, আজকের সেমিনারে স্মার্ট সিটি তৈরির জন্য যে ধারণা পত্র উপস্থাপন করা হয়েছে তার আলোকে পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেকের মেধাকে তিনি কাজে লাগাতে চান। এ জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রসহ সকল পেশাজীবী সংগঠন এবং নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা দরকার। মেয়র বলেন, নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি না পেলে সুন্দর শহর গড়ে তোলা কষ্টসাধ্য হবে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মহানগরীতে প্রায় দুই লক্ষ পাকা বাড়ি রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলো নির্মাণে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশন ও নালাসমূহ এবং পলি মাটি জমে কর্নফুলী নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় নগরীতে জলাবদ্ধতা দুঃসহ অবস্থার সৃষ্টি করছে। তিনি জানান, নগরীর মাস্টার প্ল্যানটি এখন অকার্যকর হয়ে গেছে। তাই নতুন মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। এই নতুন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে পরবর্তী জেনারেশনের জন্য এবং এর আওতা নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড পেরিয়ে ফেনী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে ২৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠান সেবামূলক কাজ করছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় না থাকায় নগরবাসীকে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে চসিক মেয়রকে সমন্বয়ের দায়িত্ব নেয়ার অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, মহানগরীর পয়ঃ প্রণালী ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্দর নগরীর সীমানা কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে বিস্তৃত হচ্ছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, মেয়রের নেতৃত্বে ২৫টি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, সমন্বয় ছাড়া উন্নয়ন হতে পারে কিন্তু কখনো স্মার্ট সিটি হবে না। তিনি এই ক্ষেত্রে আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মূল প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রকৌশলীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং পরামর্শ সম্পর্কে তাঁর অভিমত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও মূল প্রবন্ধকারকে পুষ্পস্তবক এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সেমিনারে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীরাসহ কেন্দ্রের বিপুলসংখ্যক প্রকৌশলী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।