কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে আরো একবছর (২০২১-২২ অর্থবছর)। তবে আগের মতো ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে নয়। ২৫ শতাংশ কর এবং ওই করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা ও সঞ্চয়পত্র কিনে টাকা সাদা করা যাবে। একইভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে একই হারে কর ও জরিমানা দিতে হবে। জমি ও ফ্ল্যাট কিনলে এলাকা ও আয়তনভেদে নির্ধারিত কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে।
এ সুযোগ পাওয়া যাবে আগামী ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। অপরদিকে ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকায় করা যাবে নতুন শিল্পকারখানা। অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রয়েছে। কালো টাকা সাদা করলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পাস করা অর্থবিলে এসব সংশোধনী আনা হয়েছে। সেখানে নগদ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকে রাখা টাকার পাশাপাশি শেয়ারবাজার, ফ্ল্যাট-জমিতে বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কর ও জরিমানা দিয়ে আরও এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এজন্য অর্থবিলের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে আয়কর অধ্যাদেশের একাধিক ধারা।
নগদ টাকার পাশাপাশি কারো যদি কালো টাকায় কেনা ব্যাংকে রাখা টাকা, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র থাকে, তাহলে এসব খাতে রাখা কালো টাকা সাদা করা যাবে। ২৫ শতাংশ কর ও করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করতে হবে। এছাড়া কেউ যদি কালো টাকা শেয়ারবাজারে নিয়ে যেতে চান, তাহলেও একইভাবে কর দিতে হবে। তবে ওই টাকায় কেনা শেয়ার এক বছরের মধ্যে বিক্রি করলে ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময়ে দেওয়া নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা ও এফডিআর, সঞ্চয়পত্র কিনে ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আজ বুধবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারেও একই হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ শেষ হচ্ছে আজ।
মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবায় বাড়ছে না করপোরেট কর : নতুন অর্থবছরের বাজেটে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) ওপর বাড়তি যে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এমএফএস কোম্পানিগুলো আগের মতই সাড়ে ৩২ শতাংশ হারে কর্পোরেট কর দেবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এই সংশোধনী এনে ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থবিল কণ্ঠভোটে পাস হয়। তার আগে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের দেওয়া সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রস্তাবিত বাজেটে এমএফএস কোম্পানিগুলোর ওপর বাড়তি কর আরোপের কথা বলা হয়। তালিকাভুক্ত এমএফএস কোম্পানির ক্ষেত্রে কর হার সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩৭ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত না হলে কর হার সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করার কথা বলা হয় প্রস্তাবে।
গতকাল সংসদে অর্থবিল পাসের আগে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাংসদ মো. আব্দুস শহীদ এমএফএস সেবায় অতিরিক্ত ওই কর আরোপের বিষয়টি সংশোধনের প্রস্তাব তোলেন। পরে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। ২০১২ সালে বিকাশ সেবা চালু করার পর দেশে এখন নগদ, রকেট, ইউক্যাশ, এমক্যাশ, শিওরক্যাশ এবং উপায়সহ ১৬টির মত কোম্পানি এমএফএস সেবা দিচ্ছে।