নগরের পশ্চিম শহীদ নগরে হেলে পড়া খোরশেদ ম্যানসন নামে চার তলা ভবনটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক তৈরি হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা করছেন তারা। এদিকে সিডিএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবনটি নির্মাণের সময় অনুমোদনের শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেবে তারা।
শীতলঝর্ণা খালের পাড়ে নির্মাণ করা খোরশেদ ম্যানসন গত শনিবার সন্ধ্যায় হেলে পড়ে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় শীতলঝর্ণা খালে প্রতিরক্ষা দেয়ালের নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ করার সময় ভবনটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় সেটি হেলে পড়ে। ভবনটিতে ফাটল দেখা গেছে। এতে কেউ হতাহত হননি। ভবনটিসহ আশেপাশের ৬টি ভবনের প্রায় ১০০ জন সদস্যকে সরিয়ে নেয় ফায়ার সার্ভিস। ভবনটির সামনে ও পেছনে নিরাপত্তার জন্য দড়ি দিয়ে ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া গাড়িচালক মো. বেল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যার আগমুহূর্তে হঠাৎ ধুম করে একটি শব্দ হয়। এরপর ভবনটি হেলে পড়ে। এক কাপড়ে স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে আসি। এখন ভাইয়ের বাসায় আছি। কখন কী দুর্ঘটনা ঘটে এই ভয়ে বাসায়ও ঢুকতে পারছি না।
ভবনের ভাড়াটিয়া আমান উল্লাহর বড় ভাই মো. সোহেল সাংবাদিকদের জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ভবন মালিককে সতর্ক করা হলেও তিনি তা ভাড়াটিয়াদের জানাননি। এমনকি বলেছেন কিছুই হবে না। মালিকের গাফিলতির কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে। তিনি যদি আগে ব্যবস্থা নিতেন তাহলে এই ঘটনা ঘটত না।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, নকশা অমান্য করে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবন মালিককে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তিনি জায়গা ছাড়তে রাজি হননি। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ভবনটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, আমরা প্রটেকশন দিয়ে কাজ করছি। তার ঘরটির দেয়াল খালের শূন্য (জিরো) লাইনের ওপর নির্মাণ করা। কাজ শুরুর আগেই ভবন মালিককে জায়গা ছেড়ে (ওয়ার্কিং স্পেস) দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। ক্ষতিপূরণও দেব বলেছি। কিন্তু তিনি রাজি হননি। বরং তিনি লিখিত দিয়েছেন কাজের জন্য ভবনের কিছু হলে দায়িত্ব তার।
জানা গেছে, খোরশেদ ম্যানসনের খোরশেদ দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। প্রবাসজীবনের আয় দিয়ে ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ৮ শতক জায়গায় চারতলা ভবনটি নির্মাণ করেন। ভবনটির জায়গার মালিক তার স্ত্রী মিলি কাউছার। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভবনটির তিনতলায় থাকতেন। ভবন হেলে পড়ার পর তিনি বাড়ি ছেড়ে অন্য এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন।