ধুঁকছে বিভাগীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

সাগরিকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কেবল নামেই মহিলা কমপ্লেক্স। কারণ মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠ যতটা না মহিলা ক্রীড়ার কাজে ব্যবহার হয়, তার চেয়ে বেশি ব্যবহার হয় পুরুষদের ক্রিকেট কিংবা ফুটবল অনুশীলনের কাজে। তাই এই কমপ্লেক্স থেকে মহিলা ক্রীড়াবিদরা খুব বেশি উপকৃত হচ্ছেন না। অথচ প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এই আবাসিক কমপ্লেক্সটি মহিলা ক্রীড়াবিদদের জন্য চারণ ভূমি হওয়ার কথা ছিল।
বর্তমানে মাঠটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং বিভিন্ন ক্লাব। বিসিবি এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নানা কর্মসূচিসহ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট আয়োজন করা হয় এই মাঠে। এছাড়া অন্তত পাঁচটি ক্রিকেট একাডেমি অনুশীলন করে এই মাঠে। একাডেমিগুলো হলো আফতাব আহমেদ ক্রিকেট একাডেমি, নিউ ক্রিকেট একাডেমি, মিলেনিয়াম ক্রিকেট একাডেমি, এস এস ক্রিকেট একাডেমি এবং ইস্পাহানী ক্রিকেট একাডেমি। এত খেলাধুলা যে মাঠে সে মাঠটিরও সংস্কার কাজ করার যেন কেউ নেই। পুরো মাঠ জুড়ে লম্বা ঘাস, জায়গায় জায়গায় খানাখন্দ। সব মিলিয়ে বর্তমানে মাঠের যে অবস্থা তাতে খেলাধুলা তো দূরের কথা হাঁটা চলা করাও বেশ কষ্টকর। তবু সেখানে চলছে খেলাধুলা। এই মাঠেই প্রায় তিনশর বেশি ছেলে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ক্রিকেট শিখছে। নিউ ক্রিকেট একাডেমির কোচ এবং চট্টগ্রাম জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটার মাসুম উদ দৌলা মাঠের দিকে দেখিয়ে বলেন, কীভাবে এখান থেকে ক্রিকেটার উঠে আসবে! আমরা ক্রিকেটার চাইব আর খেলার জন্য এমন ধান ক্ষেতের মত মাঠ দেব তা কি করে হয়!
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপ পরিচালক আসলাম হোসেন খান বলেন, করোনার কারণে লম্বা সময় মাঠের ঘাস কাটা সম্ভব হয়নি। আর তার সাথে ছিল বৃষ্টি। ফলে মাঠ সংস্কার কিংবা ঘাস কাটা কোনটি সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, বৃষ্টির মৌসুমটা শেষ হলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মাঠ ঠিক করে দেবে। মহিলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠের পাশে যে জায়গাটি এখনো খালি পড়ে আছে সেটিকে মাঠে পরিণত করার কোন পরিকল্পনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের রয়েছে কিনা জানতে চাইলে আসলাম হোসেন খান বলেন, আমি অনেকবার এ বিষয়ে ক্রীড়া্‌ পরিষদকে চিঠি লিখেছি, মুখে বলেছি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যখন আসেন তখন তাদের বুঝিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। তিনি দায়ী করেন বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থাকে। তারা কোন ধরনের ভূমিকা পালন করেনা।
বিসিবির জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেল বলেন, ক্রিকেট বোর্ডের যেকোন কর্মসূচির আগে মাঠ, উইকেট সবকিছু প্রস্তুত করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় ফুটবল, ক্রিকেট মিলে আবার সে মাঠ নষ্ট করে ফেলা হয়। আবার ক্রিকেট বোর্ডকে অর্থ ব্যয় করে মাঠটি সংস্কার করতে হয়। তিনি বলেন, বিশেষ করে ফুটবল দলের অনুশীলনে মাঠ নষ্ট হয়। ফুটবল মৌসুমে সারাদিন তিন-চারটি দল ফুটবল অনুশীলন করে। তখন মাঠ আর উইকেট সব নষ্ট হয়ে যায়।
ক্রিকেট বোর্ড করোনার এই লম্বা সময়ে মাঠটি সংস্কারের উদ্যেগ নেয়নি। ফলে মাঠের ঘাস এত লম্বা হয়ে গেছে যে, ক্রিকেট বল হারিয়ে গেলে তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। এরকম অবস্থায়ও সেখানে চলছে ক্রিকেট অনুশীলন। তাই ক্ষুদে ক্রিকেটারদের চাওয়া মাঠটি যেন শীঘ্রই সংস্কার করে দেওয়া হয়। যদিও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপ পরিচালক বলছেন শীঘ্রই মাঠ সংষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। এখন দেখার বিষয় কবে সে কাজ শুরু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১১ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ১৩ আ. লীগ নেতা বহিষ্কার
পরবর্তী নিবন্ধসাড়ে ছয় মাস পর চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার সর্বনিম্ন