দ্বিতীয় টিউবের কাজ শেষ হবে শুক্রবার

নির্ধারিত সময়ের আগে খুলে দেওয়ার আশা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৬ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দ্বিতীয় টিউবের বোরিং কাজ শেষ হচ্ছে আগামী শুক্রবার। ওইদিন মধ্যরাতে নদীর তলদেশে দুই পাড় সুড়ঙ্গ পথে আবারো এক হচ্ছে। এর আগে প্রথম টিউবের বোরিং কাজ শেষ হয় মাস কয়েক আগে। বর্তমানে প্রথম টিউবে রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। মাসখানেকের মধ্যে দ্বিতীয় টিউবেও রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হবে। আগামী বছর টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নিয়ে আলোচনা হয়। এতে টানেলের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে টানেলের ১ম টিউবের ৫৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ লেন স্ল্যাব ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগস্ট মাস পর্যন্ত টানেলের ২য় টিউবের ৮৬ দশমিক ২০ শতাংশ বোরিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী শুক্রবার মধ্যরাতে এই বোরিং কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হবে। আনোয়ারা থেকে করে আসা বোরিংয়ের মাধ্যমে পতেঙ্গার সাথে সুড়ঙ্গ পথ যুুক্ত হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বৈঠকে জানান, টানেলের প্রয়োজনীয় শতভাগ অর্থাৎ ১৯ হাজার ৬১৬টি সেগমেন্ট এবং রিজেক্টেড সেগমেন্টসমূহের সমপরিমাণ সেগমেন্টের পুনঃনির্মাণ কাজও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এই টানেল সময়ের আগে খুলে দেওয়ার কারণে ব্যয় কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে। আগামী শুক্রবার মধ্যরাতে এর দ্বিতীয় মুখ উন্মোচন করা হবে। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। তবে এখনই পরিবহন যাতায়াত করতে পারবে না। পুরোপুরি সম্পন্ন করতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
তিনি বলেন, চীনের সাংহাই নগরীর আদলে চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউনে’র আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম শহর এবং নদীর অপর পাড়ের আনোয়ারা নতুন শহর হিসেবে গড়ে উঠবে। টানেলের এক প্রান্তে আনোয়ারায় ভারী শিল্প এলাকা এবং অন্য প্রান্তের চট্টগ্রাম নগরী, বিমান ও সমুদ্রবন্দর। কর্ণফুলী নদী দিয়ে বিভক্ত দুই প্রান্তকে যুক্ত করতে সরকার স্বপ্নের এই টানেল বাস্তবায়ন করছে।
৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায়। বাংলাদেশ সরকার ও চাইনিজ এঙ্মি ব্যাংক যৌথভাবে অর্থায়ন করছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০২২ সালের মধ্যে টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি পুরোদমে চালু হলে বছরে প্রায় ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি চালু হলে চট্টগ্রাম তথা দেশ পাল্টে যাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন প্রকৌশলী গতকাল আজাদীকে জানান, টানেলের প্রথম টিউবে রাস্তা তৈরির কাজের পাশাপাশি দ্বিতীয় টিউব বোরিং করার কার্যক্রম চালানো হয়। আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় টিউবের বোরিং শেষ হচ্ছে। এতে করে টানেলের কঠিনতম এবং মূল কাজ শেষ হচ্ছে। এখন স্ল্যাব বসিয়ে রাস্তা ঢালাই দেওয়া হবে। দ্রুততম সময়ে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের সাথে দুদিকের অ্যাপ্রোচ রোডসহ আরো কিছু কার্যক্রম চলছে। সব কাজ শেষ হলে যান চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছয় ঘণ্টায় জাকারবার্গের লোকসান ৫১ হাজার কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধ১৮ অক্টোবর খুলছে চবির আবাসিক হল