দ্বিতীয় ম্যাচেও লজ্জার হার টাইগারদের

সিরিজ জিতে নিল ভারত

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১০ অক্টোবর, ২০২৪ at ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

আরও একবার ধারহীন বোলিং আর হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ডুবল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে একটি মাত্র টিটোয়েন্টি ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। সেটা এই দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে। ২০১৯ সালের সে স্মৃতিকে এবার আর ফেরাতে পারল না শান্তলিটনরা। যথারীতি হারের সংখ্যাটা বাড়াল। টিটোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিক ভারত। গতকাল শুরুটা ভালই করেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু পরে আর সেটা ধরে রাখতে পারেনি। প্রথম তিন ব্যাটার দ্রুত ফিরে গেলেও পরে নিথিশ, রিংকু আর হার্দিক পান্ডিয়ারা দেখিয়ে দিয়েছে চাপ সামলে কীভাবে বেরিয়ে আসতে হয়। টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠানোর নাজমুল হোসেন শান্তর সিদ্ধান্তটা শুরুতে সঠিকই মনে হচ্ছিল। নিজের প্রথম এবং ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তাসকিনের আঘাত। দলীয় ১৫ রানের মাথায় সঞ্জু স্যামসনকে ফেরান তাসকিন। ৭ বলে ১০ রান করেন এই ওপেনার। পরের ওভারে তানজিম হাসান সাকিব আউট করেন অভিষেক শর্মাকে। ১৪৭ কিলোমিটারের বেশি গতির বলে ইনসাইডেজ হয়ে স্টাম্প ভাঙে অভিষেক শর্মার। ১১ বলে তিনি করেন ১৫ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে উইকেট পেতে পারতেন তানজিম সাকিব। কিন্তু নিতিশ কুমারের ব্যাটে ছুঁয়ে যাওয়া বল লাফ দিয়ে গ্লাভসে নিয়েও রাখতে পারেননি লিটন দাস। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান তুলে নেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত তোলে ৪৫ রান। বাংলাদেশ যখন স্বপ্ন দেখছিল ভারতকে কম রানে বেঁধে ফেলার তখনই ম্যাচের বাঁক বদল। নিথিশ কুমার এবং রিংকু সিং মিলে ১০৮ রানের জুটি গড়েন। ৬ ওভারে ৪৫ রান করা ভারত ১০ ওভারে ১০০ রান তুলে নেয়। ৪৫ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন নিতিশ আর রিংকু। ২৭ বলেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিতিশ। ইনিংসের ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজ এসে ভাঙেন এ জুটি। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। রানের পাহাড়ে চড়ার পথে এগিয়ে যেতে থাকে ভারত। মোস্তাফিজের কাটারে বল আকাশে তুলে দেন নিথিশ। ৩৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ৪টি চারের সাথে ছক্কা মারেন ৭টি। এরপর ছক্কা মেরে ফিফটি পূরণ করেন রিংকু। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি আসে তার ব্যাট থেকে। ১৭তম ওভারে তাসকিনকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে জাকের আলির হাতে ধরা পড়েন রিংকু। ২৯ বলে ৫টি চার আর ৩ টি ছক্কায় তিনি করেন ৫৩ রান। শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়া ১৯ বলে ৩২ আর রিয়ান পরাগ ৬ বলে ১৫ রানের ইনিংসের সুবাধে ২২১ রানে পৌঁছে ভারত। প্রথম তিন ওভারে ৪৭ রান খরচ করা রিশাদ ইনিংসের এবং নিজের শেষ ওভারে এসে তুলে নেন তিনটি উইকেট। তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। ৪ ওভারে ১৬ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন।

২২২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। শুরু থেকেই দ্রুত রান তোলার তাড়না ছিল তার মাঝে। কিন্তু তৃতীয় ওভারে এসে ইমনকে ফেরান আর্শদ্বীপ। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ১২ বলে ১৬ রান করেন ইমন। মেরেছেন ৩টি চার। নাজমুল হোসেন শান্ত ৭ বলে ১১ রান করে ফিরলেন ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে। এরপর দুই ওভারে ফিরলেন লিটন দাশ এবং তাওহিদ হৃদয়। ৪৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৪ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হলেন দুজন। ১৬ বলে ১৬ রান করে ফিরেন মিরাজ। জাকের আলি এলেন আর গেলেন। রিশাদকে বিদায় করলেন বরুণ চক্রবর্তী। ততক্ষণে বাংলাদেশের হার নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর সেটা বুঝতে পেরেই মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা করলেন নিজের খেলাটা খেলে আসার। কিন্তু পারলেন না নিজের হাফ সেঞ্চুরিটা তুলে নিতে। শেষ ওভারের প্রথম বলে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ ৩৯ বলে ৪১ রান করে। আর বাংলাদেশ থামে ১৩৫ রানে। যা প্রথম ম্যাচের তুলনায় ৮ রান বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্গোৎসব পালনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে
পরবর্তী নিবন্ধঢাকা-কক্সবাজার রুটে আজ থেকে ৭ দিন চলবে বিশেষ ট্রেন