সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। এ সময় ক্লাস, পরীক্ষা নেওয়া ও সকল দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত থাকেন তারা।
এদিকে বৃষ্টিতে ভিজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা পুনর্বহাল প্রত্যাহার চেয়ে চার দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ছাত্র সমাবেশ ও মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিজ নিজ কার্যালয়ে অবস্থান করে কর্মবিরতি পালন করেন। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে চবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে চাকসু, কলা ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও জিরো পয়েন্ট হয়ে চবি স্টেশন পর্যন্ত বৃষ্টির মাঝে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা পুনর্বহাল প্রত্যাহার চেয়ে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো তারাও আন্দোলন চালিয়ে যান। সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি না মানলে ৪ জুলাইয়ের পর দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উভয়েই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এবিএম আবু নোমান বলেন, এই পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তিকরণ আমাদের শিক্ষকদের অনেক ক্ষতি করবে। এছাড়া শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে যাওয়ার বিষয়টিও সুরাহা হয়নি। আমরা শিক্ষকদের জন্য একটা আলাদা বেতন স্কেল চাই। শিক্ষার্থীদের ক্ষতির ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা কখনো শিক্ষার্থীদের ক্ষতি চাই না। আমাদের দাবি পালন হলেই কর্মবিরতি থেকে ফিরে আসব।
চবি অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল আসাদ বলেন, দেশব্যাপী যে আন্দোলন, আমাদেরও সেই আন্দোলন। ২০২৩ সালে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের যে বিধিমালা হয়েছে, ২০২৪ সালে ওখানে প্রত্যয় স্কিম সংযুক্ত করা হয়েছে। এই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতেই আমাদের কর্মবিরতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা ঐক্য পরিষদ গঠন করেছি। এটার মাধ্যমে আমাদের কর্মসূচি চলবে।
কোটাবিরোধী ছাত্র সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মেধা না কোটা? মেধা মেধা’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না, আর না’ স্লোগানে মুখরিত করেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা নিশ্চয় নিজেদের সন্তান আর নাতি–নাতনির কোটার জন্য লড়াই করেননি। তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমরাও ৫৬% কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আগামী ৪ জুলাই আপিল বিভাগের রায় ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিদিন আমাদের সমাবেশ অব্যাহত রাখব।