রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম–দোহাজারী ৪৪ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর প্রকল্প বাস্তবায়নে বিরাজ করছে শম্বুকগতি। এ প্রকল্পে আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও গড় ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তবে আর্থিক অগ্রগতি আরো কম অর্থাৎ ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রেল ভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ‘চট্টগ্রাম–দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর’ প্রকল্পটিতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়ন করবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭৯৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় খরচ হয়েছে মাত্র ৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পায়। মূলত ঢাকা থেকে কঙবাজার সরাসরি ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সুফল পেতে পাহাড়তলী–ষোলশহর হয়ে দোহাজারী পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার মিটারগেজ (এমজি) রেলপথকে ডুয়েলগেজে উন্নীত করার লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। এদিকে নবনির্মিত দোহাজারী–কঙবাজার রেলপথের সাথে সঙ্গতি রেখে এই পথ ডুয়েলগেজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দোহাজারী থেকে কঙবাজার পর্যন্ত নবনির্মিত ১০১ কিলোমিটার রেলপথটি সিঙ্গেল ট্র্যাক ডুয়েলগেজে নির্মিত। অপরদিকে দোহাজারী থেকে নগরীর পাহাড়তলী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রেলপথটি দীর্ঘদিনের পুরনো মিটারগেজে নির্মিত। ঢাকা–কঙবাজার সরাসারি ট্রেন চলাচলের সুফল পেতে পাহাড়তলী–দোহাজারী রেলপথটি ডুয়েলগেজে উন্নীত করা জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম–দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের লক্ষ্যে গত ২৯ অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।
এ প্রকল্পের ব্যাপারে রেলওয়ের অতি. মহাপরিচালক (অবকাঠামো) আল ফাত্তাহ মোঃ মাসউদুর রহমান আজাদীকে বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম–দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ ক্রয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি টেন্ডারের পর্যায়ে আছে। এই প্রকল্পের অধীনে লোকোমোটিভগুলো এলে ইঞ্জিন সংকট কিছুটা কমবে। উক্ত ক্রয় কার্যক্রমের জন্য রেলওয়ে খসড়া স্পেসিফিকেশন প্রস্তুত করেছে। চট্টগ্রাম–দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর প্রকল্পটিতে এডিবি অর্থায়ন করবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঋণচুক্তির বিষয়ে চলতি বছরের ২৪ আগস্ট এডিবির সঙ্গে ইআরডির (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) লোন নেগোশিয়েশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানান রেলভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।











