সংবিধান সংস্কার কমিশন কর্তৃক দেশে উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণের উদ্দ্যেশ্যে দেশের সব বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী আসন প্রবর্তনের সুপারিশটি অত্যন্ত যৌক্তিক এবং যুগোপযোগী। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও মামলার জট এর কথা বিবেচনা করলে এর কোনো বিকল্প নেই। সেখানে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের আসন রাজধানীতেই থাকবে, তবে হাইকোর্টের সমান এখাতিয়ার প্রাপ্ত সব বিভাগেই একটি করে স্থায়ী হাইকোর্ট বিভাগ থাকবে। বিচার পাওয়ার জন্য সাররাদেশ থেকে ঢাকায় উচ্চ আদালতে দৌড়াতে হয় বিচার প্রার্থী নাগরিকদের। মামলায় জট শুধু নিম্ন আদালতে নয় দেশের উচ্চ আদালতকেও অচল করে দিয়েছে। এ মুহূর্তে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন গঠন, বিচার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ও জনবান্ধব করতে এ সুপারিশ দ্রুত কার্যকর করা চাই। যেমন আমাদের বিভাগের কথা বললে দেশের একমাত্র বন্দর নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে ১৯৮৩ সালে একটি স্থায়ী ব্যাঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হলেও তা তৎকালীন সংবিধান সংশোধনের নামে বাতিল করা হয়। ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম বার এসোসিয়েশন ১৩২ বছর পূর্তী হলেও কিন্তু আজো চট্টলাবাসীর প্রাণের দাবী দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বার আউলিয়ার আবাদভূমি চট্টগ্রামে আর কখনো পুনরায় একটি স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা হলো না। দেশের প্রত্যেক বিভাগের জনগণের দীর্ঘদিনের একটি চাওয়া পাওয়ার সোনার হরিণ ‘স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ’। যদিও বর্তমানে দাবিটি সংবিধান সম্মত নয়, তবুও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এ দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনা করে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনীর সময়ও বর্তমানে এসে গেছে। এ প্রত্যাশার ভিত্তিতে আমার এ লিখার অবতারণা। ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ শাসনের সুবিধার্থে কলকাতায় একজন গর্ভনরের পদ সৃষ্টি করা যায় কিনা প্রশ্নে একটি কমিশন গঠিত হলে এর রিপোর্টে বলা হয়– প্রশাসনিক দিক থেকে শুধু কলকাতাকে লেঃ গভর্নরের মর্যাদা দেয়ার সার্বিক প্রয়োজনীয়তা যেমনি রয়েছে তেমনি সমপর্যায়ে গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে চট্টগ্রামেরও অনুরূপ স্বীকৃতির। কারণ কলকাতায় যেমন নৌ–যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে তেমনি চট্টগ্রামেও একই সুবিধা রয়েছে। কারণ দুটিই বঙ্গোপসাগরের সীমানায় অবস্থান করছে। তদুপরি প্রাকৃতিক দিক থেকে চট্টগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে। অতএব, প্রশাসনিক দিক থেকে চট্টগ্রামকেও কলকাতার সমপর্যায় গুরুত্ব দিয়ে অত্র জেলার জন্য একটি লেঃ গর্ভনরের পদ সৃষ্টির জন্য সুপারিশ করা গেল (ব্রিটিশ ইন ইন্ডিয়া/ স্যার এডমন্ড এফ, গিল্ড/ পৃঃ ১২৭= ১৩১)। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বিদেশী শাসক গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে চট্টগ্রাম একটি সম্ভাবনাময়ী নগরী হিসেবে স্বীকৃত। এতদসত্ত্বেও প্রত্যেক বিভাগে বরাবরই সার্বিক দিক থেকে অবহেলিত ও বঞ্চিত। দেশের কর্ণধারদের চিন্তা–চেতনা সর্বদা ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় দেশের সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয় প্রচলিত অর্থে কার্যত এটা বাণিজ্যিক রাজধানী নয়। কারণ এখানে এর আনুষঙ্গিক উপায় উপকরণ স্থাপন করা হচ্ছে না। কোন ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় আজো চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়নি। বরঞ্চ যেগুলো ছিল সেগুলোও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর হওয়া সত্ত্বেও নেভাল হেড কোয়ার্টার ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক ও বাস্তবতার পরিপন্থীও বটে। রেলওয়ের হেড কোয়ার্টারও স্থানান্তরের প্রয়াস চলছে। আজ শুধু আলোচনা করবো চট্টগ্রামে উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার আকুল আবেদন নিয়ে। দীর্ঘ দিন যাবত চেম্বার অব কমার্স চট্টগ্রামের আইনবিদ সহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ বন্দর নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। কেউ কেউ সার্কিট বেঞ্চের দাবী জানালেও দেশের অন্য সকল বিভাগের জন্য প্রয়োজন স্থায়ী বেঞ্চ। এ জন্যে প্রয়োজনে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এর সংশোধনের বিধানও রাখা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, পার্লামেন্ট সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানের যে কোন বিধানের পরিবর্তন করতে পারে, এমনকি সরকারের ধরনও (অনুঃ ১৪২) পরিবর্তন করতে পারে। সংবিধান প্রণয়নের কোনো মৌলিক উদ্দেশ্য ব্যাহত না হলে এ ধরনের সংশোধন বৈধ। এডভোকেট ও বিচারপ্রার্থী মানুষ বর্তমানে ঢাকা হাইকোর্টে মোকদ্দমার আধিক্য, বিচারপ্রার্থী জনতার হয়রানি ও আর্থিক দুর্দশা থেকে রেহাই দিতে দেশের সকল বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের জন্য পতিত সরকার এবং জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্যদের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। দেশের সকল বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী কোনো বেঞ্চ না থাকায় বিচার প্রার্থী লোকজনকে ঢাকায় নানা ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এক সময় চট্টগ্রামে ১৯৮৩ সালে আগ্রাবাদ জাম্বুরী মাঠের পাশে মোট ২৭,০০০ বর্গফুট আয়তনের ভবনে ৪৪ কক্ষ বিশিষ্ট দুটি এজলাসসহ হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করা হলেও পরবর্তীতে সংবিধানের ৮ম সংশোধনীর বিপরীতে সুপ্রীমকোর্টের একটি আদেশের মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়। সেই থেকে চট্টগ্রামে বিচার প্রার্থী লোকজনকে আবার ঢাকায় দৌড়াতে হচ্ছে। ভারতের বিচার ব্যবস্থায় ভারতের বিহার, উড়িষ্যা এক সময় কলকাতা হাইকোর্টের আওতাধীন ছিল। কালের বিবর্তনে বর্তমানে বিহার, উড়িষ্যা ও কলকাতায় পৃথক পৃথক হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এদিক থেকে ভৌগোলিক অবস্থান, গুরুত্ব ও স্থানের প্রেক্ষাপটের কারণে চট্টগ্রামেও হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। ১৯৬৯–৭০ সালের দিকে তদানীন্তন গণপূর্ত বিভাগ আগ্রাবাদের জাম্বুরী মাঠের পাশে ৬ দশমিক ৫৫ একর জায়গার উপর হাইকোর্টের একটি স্থায়ী ভবনের কাজ শুরু করে এবং তার নির্মাণ কাজ ১৯৭২ সালে সমাপ্ত হয়। ১৯৮৩ সালে ১৮ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাইকোর্টের জন্য ৪৪ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করে। ভবনে হাইকোর্টের এজলাসের জন্য দুটি কক্ষও বরাদ্দ করা হয়েছিল। চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের ফলে এ এলাকার জনসাধারণের তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত কম সময় ও কম খরচে নতুন বিচার ব্যবস্থার সুফল ভোগ করেছিল এবং যোগ্য আইনজ্ঞ ও বিচারক সৃষ্টির পথ সুগম হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা বাতিল করলে বিচার প্রার্থী লোকজনের মধ্যে ভোগান্তি বৃদ্ধি পায়। আমি আমার মরহুম আইনজীবী পিতা এডভোকেট আবু মোহাম্মদ য়্যাহ্য়্যাহ’র হাত ধরে সেখানে বেশ কয়েকবার যাওয়ার সুযোগ পাই। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ষ্ঠ ভাগে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাংবিধানিক ব্যবস্থা দেয়া হয়েছে। ১ম পরিচ্ছেদে ৯৪(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট‘’ নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকবে এবং আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তা গঠিত হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রধান বিচারপতি, সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থান সমূহ নির্ধারণ করেন, সে স্থান সমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে পারবে। সংবিধানের (৮ম সংশোধনী) আইন ১৯৮৮ বলে ১০০ অনুচ্ছেদে সংশোধন করা হয়েছিল। যাতে ১৯৮৮ সালের ৩০ নং আইন বলে সংশোধিত ১০০ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও ময়মনসিংহ –এ হাইকোর্ট বিভাগের একটি করে স্থায়ী বেঞ্চ থাকার বিধান রাখা হয়। এতে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে যেরূপ স্থান নির্ধারণ করবেন, প্রত্যেক স্থায়ী বেঞ্চের সেরূপ বেঞ্চ সমূহ থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদের ৮ম সংশোধনী আইন, ১৯৮৮ এর মাধ্যমে এতদসংক্রান্তে যে সংশোধন আনয়ন করা হয়েছিল তা সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ ১৯৮৯ সালে এখতিয়ার বহির্ভূত ও অকার্যকর ঘোষণা করে। ফলে মূল ১০০ অনুচ্ছেদটি পুনঃবহাল করা হয়। এতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও ময়মনসিংহ এ প্রতিষ্ঠিত হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ সমূহ বাতিল করে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের কথা বলতে গেলে সরকার ব্যবসা–বাণিজ্য ও আইন–শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে ঢাকায় পরেই বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে থাকলেও এখানে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ না থাকার দরুন সুদৃঢ় অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত মোকদ্দমার জন্য ঢাকার এডমিরালটি কোর্টের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই ও অথচ হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ চট্টগ্রামে থাকলে এখানে এতদসংক্রান্ত মোকদ্দমা ছাড়া এই অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক দেওয়ানী, ফৌজদারী মোকদ্দমা, আপিল রিট, রিভিশন ইত্যাদির জন্য জনগণকে রাজধানীমুখী হয়ে থাকতে হতো না ও এ এলাকায় সামুদ্রিক আইন এখতিয়ার, কোম্পানি অইিন ও রিট এখতিয়ার নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রামে (হাইকোর্ট ডিভিশন) বেঞ্চ পুনঃ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে ও দুঃখজনক হলেও সত্য য়ে, হাইকোর্টে প্রাকটিসরত এডভোকেটদের অনেকেই চান না দেশের অন্য কোথাও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হোক যা ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের ঢাকার একচ্ছত্র আইনপেশায় ভাটা পড়ার আশঙ্কা থাকবে ও এটা সংকীর্ণ চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। অথচ তখন বেশি ফিস নিয়ে যে কোন বিভাগে এডভোকেট গণ মামলা করতে আসতে পারবেন। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে এবং হাইকোর্ট বিভাগে অমীমাংসিত মামলার সংখ্যা সকল বিভাগের ধারণ ক্ষমতার বহির্ভুত হয়ে পড়েছে ও এ অবস্থায় সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে দেশের প্র্যত্যেক বিভাগে হাইকোর্টের একটি করে স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করলে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। এতে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও সমুদ্র অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত মামলা সমূহ সহজে নিষ্পত্তি হলে পুরো দেশ, লাভবান হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর জনসংখ্যা চার গুণ হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা কেন্দ্রিক স্বার্থান্বেষী মহল দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছেন যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার সামুদ্রিক আইন এখতিয়ার (এডমিরালটি জুরিসডিকশন) কোম্পানি আইন এখতিয়ার (কোম্পানিস মেটার জুরিসডিকশন) রিট সহ হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাসহ একটি স্থায়ী বেঞ্চ বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে অন্যান্য বিভাগেও পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠার দাবি অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত। দেশের সকল বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হলে হাইকোর্ট বিভাগের গুণগত অবনতির যুক্তিও কেউ কেউ প্রদর্শন করে থাকেন।
অথচ এর গুণগত মানের ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব সম্মিলিতভাবে বিচারপতি ও আইনবিদগণের উপর যুগপৎভাবে বর্তায়। বর্তমানে হাইকোর্টে অভিজ্ঞ আইনবিদর যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ করার জন্যও দেশের সকল বিভাগে স্থায়ী বেঞ্চ আবশ্যক। কেননা এর ফলে এতদাঞ্চলে ভবিষ্যতে হাইকোর্ট বিভাগে এডভোকেট এর দায়িত্ব পালনে সক্ষম অধিকসংখ্যক বিজ্ঞ কৌসূলি সৃষ্টির সূচনা হবে। বিচার বিভাগকে জাতীয় স্বার্থে আরো কার্যকর তথা বাস্তবতার নিরিখে দেশের বিভাগগুলোতে একটি করে স্থায়ী বেঞ্চ অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত দাবি। সর্বশেষে জনসংখ্যা এবং মামলা মোকাদ্দমায় বহুগণ বৃদ্ধির জন্য সময়ের প্রয়োজনে দেশের প্রত্যেক বিভাগে একটি করে স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই। ঢাকা হাইকোর্টেও মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশের সকল বিভাগের সর্বস্তরের আইনবিদ, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও বিচারপ্রার্থী নাগরিকদের নিয়ে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক এটাই আমাদের আগামীদিনের প্রত্যাশা।
লেখক: এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট ও জেলা জজ আদালত, মানবাধিকারকর্মী, কলামিস্ট ও সুশাসনকর্মী।