কেএসআরএম এর মালিকানাধীন এস আর শিপিং এর ব্যানারে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের শততম জাহাজ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে ‘এমভি জাহান ওয়ান’। চারটি কোম্পানি একই সাথে জাহাজ কিনে শততম জাহাজ হিসেবে নিজেদের জাহাজ তালিকাভুক্ত করার আবেদন করেছিল। তবে বাংলাদেশের জলসীমায় আগে প্রবেশ করায় এমভি জাহান–ওয়ানই সৌভাগ্যবান শততম জাহাজ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার গৌরব অর্জন করলো। আরো তিনটি জাহাজ বাংলাদেশের পথে রয়েছে। ওগুলোও ক্রমান্বয়ে তালিকাভুক্ত হবে। চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা একশ’ দশটিতে উন্নীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
এমভি জাহান–ওয়ান বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার নামের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়ার মেয়ারা ওয়ানতাই বন্দর থেকে প্রায় ৬০ হাজার টন কয়লা নিয়ে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। বুধবার সকালে জাহাজটি সরেজমিনে সার্ভে বা জরিপ করতে যান জাহাজ নিবন্ধনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার অব শিপস বাংলাদেশের প্রধান ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ। গতকাল বহির্নোঙরে গিয়ে জাহাজটি সার্ভে করেন তিনি। জাহাজটিকে শততম জাহাজ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে। এমভি জাহান ওয়ান নামে নিবন্ধনের আগে জাহাজটি ছিল পানামার পতাকাবাহী। তখন নাম ছিল ‘এমভি নর্ড প্যাসিফিক’।
১৯৯ মিটার দীর্ঘ ও প্রায় ৬০ হাজার টন পণ্য পরিবহন সক্ষমতার জাহাজটি তৈরি হয়েছে ২০১৮ সালে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাহাজটি কেনার পর বাংলাদেশি পতাকাবাহী হিসেবে চলাচলের জন্য আবেদন করে কেএসআরএম।
এর আগে শততম জাহাজ হিসেবে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল দেশের শীর্ষ তিন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে মেঘনা গ্রুপ ‘মেঘনা সেঞ্চুরি’, কবির গ্রুপের ‘এমভি জাহান ওয়ান’ এবং ভ্যানগার্ড গ্রুপের ‘রয়েল আরাকান’। এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপও একটি জাহাজের নিবন্ধন চেয়েছিল। পাইপ লাইনে থাকা অপর তিনটি জাহাজ দেশে পৌঁছালে বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৩টিতে।
দেশে বর্তমানে আকিজ গ্রুপের ১০টি, এইচআর শিপিংয়ের জাহাজ আটটি, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সাতটি, ভ্যানগার্ড গ্রুপের সাতটি এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ছয়টি জাহাজ পণ্য পরিবহন করছে। এছাড়া বিএসএ শিপিংয়ের তিনটি, এমআই সিমেন্টের তিনটি, ডুরিয়া শিপিংয়ের দুটি, হানিফ মেরিটাইমের দুটি, ওরিয়ন গ্রুপের একটি, মবিল–যমুনা গ্রুপের একটি, পিএনএন শিপিংয়ের একটি, অ্যাডভান্সড শিপিংয়ের একটি, ডরিন শিপিংয়ের একটিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জাহাজ আছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে। এসব জাহাজের মধ্যে নয়টি কন্টেনারবাহী, যার সবগুলো এইচআর লাইনের। তিনটি এলপিজি, কেমিক্যাল ট্যাংকার পাঁচটি, অয়েল ট্যাংকার সাতটি ও কার্গো জাহাজ ৭৭টি।