দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে; একদিনে আরও ৩ হাজার ৬২৯ জনের মধ্যে ধরা পড়েছে সংক্রমণ। এর মধ্য দিয়ে নয় দিন পর দেশে মৃত্যুর সংখ্যা নব্বইয়ের নিচে নামল। আর দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার হাজারের নিচে নামল চার দিন পর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ৮টা সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৮৬৯ জনে পৌঁছাল। আর গত এক দিনে আরও ৩ হাজার ৬২৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭০৩ জন হল। খবর বিডিনিউজের।
সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৫ হাজার ২২৫ জন গত এক দিনে সেরে উঠেছেন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭৪ জন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। মাঝে দুদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজারের ঘরে থাকলেও ১৯ থেকে ২২ এপ্রিল প্রতি দিনই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজারের মধ্যে। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১৫ এপ্রিল তা দশ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালে রোগীর যখন প্রচণ্ড চাপ, সে সময় ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিন প্রথমবারের মত দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৯০ ছাড়ায়। এর দুই দিনের মাথায় তা একশ ছাড়িয়ে যায়। ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল চার দিন দেশে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর বেশি। ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৪ থেকে ২২ এপ্রিল- টানা নয় দিন পর দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা নব্বইয়ের নিচে নামার খবর এল।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৪ কোটি ৪৮ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩০ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি মানুষের। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৪৯টি ল্যাবে ২৫ হাজার ৮৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৩ লাখ ৩ হাজার ৮টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৮০টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৯২৮ টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৬২ জন পুরুষ আর নারী ২৬ জন। তাদের ৬৩ জন সরকারি হাসপাতালে ৩৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং একজনকে হাসপাতালে মৃত্ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৬ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৫৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ৩ জন সিলেট বিভাগের, ৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ৫ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১০ হাজার ৮৬৯ জনের মধ্যে আট হাজার ১০ জনই পুরুষ এবং দুই হাজার ৮৫৯ জন নারী।