পাঁচ বছর আগের চেয়ে দেশে বেকারের সংখ্যা ৭০ হাজার কমে ২৬ লাখ ৩০ হাজার জনে দাঁড়িয়েছে; বেকারত্বের এ হার মোট শ্রমশক্তির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগে ২০১৭ সালের জরিপে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ, যা ওই সময়ের শ্রমশক্তির ৪ দশমিক ২ শতাংশ। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সবশেষ জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেকারের নতুন পরিসংখ্যান তুলে ধরে। খবর বিডিনিউজের।
কোভিড মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অর্থনীতিতে অস্থিরতা ও ধীরগতিতে কাজ হারানো মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যে সবশেষ জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হল। অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা অর্থনীতির টানাপোড়নে ব্যবসা–বাণিজ্যসহ সবক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার কারণে নতুন করে অনেকের বেকার হওয়ার কথা বললেও জরিপে উঠে এসেছে উল্টো তথ্য।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২’ প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এবারের জরিপে বেকারত্ব কমার কারণ তুলে ধরেন। এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোভিডের পর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। ওই সময়ে বৈশ্বিক মহামারীর কারণে লকডাউনসহ বিভিন্ন কারণে শিল্প এবং সেবা খাত থেকে উল্লেখযোগ্য একটা অংশ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছিল। পরে এসব বেকার গ্রামে বা বিভিন্নভাবে কৃষি এবং পোল্ট্রিসহ আরও অনেক কৃষিভিত্তিক খাতে কাজ করেছে। এর ফলে এবারের শ্রম জরিপে বেকারত্ব কমে যাওয়া এবং কৃষি খাতের শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এদিন অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জুনের মধ্যে জরিপের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
সবশেষ জরিপের প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত জনবল ৭ কোটি ৩৪ লাখ জন। এরমধ্যে ৪ কোটি ৭৪ লাখ পুরুষ এবং ২ কোটি ৫৯ লাখ নারী; ৫ বছর আগে যা ছিল ৬ কোটি ৩৫ লাখ। অপরদিকে বেকার জনবলের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এরমধ্যে বেকার পুরুষ ১৬ লাখ ৯০ হাজার এবং নারী ৯ লাখ ৪০ হাজার।
২০১৬–১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সময় দেশে প্রায় ২৭ লাখ বেকার ছিল। এরমধ্যে ১৪ লাখ পুরুষ এবং নারী ছিলেন ১৩ লাখ। ২০১৬–১৭ অর্থবছরে করা আগের জরিপের চেয়ে এবারের জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, ১৫ বছরের বেশি বয়সী শ্রমশক্তির মধ্যে পুরুষের বেকার হওয়ার হার বেড়েছে। আগের জরিপে এ হার ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০২২ সালে হয়েছে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অপরদিকে একই বয়সী নারীদের বেকার হওয়ার হার অনেক কমেছে। আগের জরিপে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে তা এবার ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এদিন জরিপের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।