দেশে ছুটিতে আসার সমস্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত। গত শুক্রবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটের ফ্লাইটে ওমান থেকে দেশে ফেরার বিমানের টিকেটও কাটা হয়েছিলো ওমান প্রবাসী ফরিদের। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, দেশে এসে পরিবার নিয়ে রমজান শেষে ঈদ করা হলো না ফরিদের। দেশে ফেরার মাত্র একদিন আগে গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফরিদ।
গতকাল রবিবার দুপুরে নিহত ফরিদের পাশের রুমের মামুন বিষয়টি গণমাধ্যকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ওমান সময় রাত সাড়ে দশটার দিকে নিজ শয়ন কক্ষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ফরিদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তিনি হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডস্থ ওসমান আলী জমিদার বাড়ির মেহেরুজ্জামানের পুত্র।
প্রবাসী মামুন জানান, প্রায় ১৪ বছর পূর্বে ফরিদ ওমানে যান। ওমানের নিজুয়া শহরের সানাইয়া এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজে ডেন্টিংয়ের কাজ করতেন তিনি। গত শুক্রবার রাত আড়াইটার একটি ফ্লাইট যোগে ছুটিতে দেশের বাড়িতে আসার কথা ছিলো তার। রাতে তারাবির নামাজ আদায় করে বাড়িতে আসবে বলে কিছু কেনাকাটা করতে বের হন তিনি। কেনাকাটা সেরে বাসায় ফিরে পোশাক পরিবর্তন করার মুহুর্তে হঠাৎ পড়ে যান ফরিদ। এ সময় তার পার্শ্ববর্তী রুমের লোকজন এসে ফরিদকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দেন। এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে খবর পেয়ে তার নিয়োগকর্তা (কফিল) এসে ফরিদকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে নিহতের মরদেহ ওমানের নিজুয়া শহরস্থ একটি হাসপাতালের হিম ঘরে রাখা হয়েছে। ফরিদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় সকল প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নিহতের মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হবে।
পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জাফর ওমান প্রবাসী ফরিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আনুমানিক গত দুই বছর দুই মাস পূর্বে তিনি দেশে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় নিজ কর্মস্থল ওমানে ফিরে যান। মরহুম ফরিদের সিমরান নামের ১৩ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান এবং সাইম নামের ১০ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এদিকে দুই সন্তানের জনক ফরিদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর তার গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছলে স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়।
