দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, সরকারি হিসাবে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাত লাখ। সর্বশেষ এরচেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল গত ২৮ মার্চ; সেদিন ৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর গত ৩৭ দিনে তা এর নিচে নামেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১ হাজার ৮২২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬০ জন। আর করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ১১ হাজার ৭৯৬ জনে পৌঁছেছে। সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন; এ পর্যন্ত সুস্থ মোট হয়েছেন ৭ লাখ ২ হাজার ১৬৩ জন। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১ মে তা সাড়ে ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর ওপরে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩২ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি মানুষের। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪২৮টি ল্যাবে ২১ হাজার ৫৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ লাখ ৬ হাজার ৭২৫টি; বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৮টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ২২ জন পুরুষ আর নারী ১৯ জন। তাদের ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। বাসায় মারা গেছেন এক জন। তাদের মধ্যে ২৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের এবং ২ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এ পর্যন্ত মৃত ১১ হাজার ৭৯৬ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৫৬৬ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ২৩০ জন নারী।